Advertisement
Advertisement
Lal Bazar

১০০ সিসিটিভি ফুটেজের পিছনের ছুটে নাটকীয় কায়দায় এটিএম লুঠের পান্ডাকে ধরল লালবাজার

কলকাতায় এটিএম ভেঙে ১৩ লাখ টাকা লুঠ করেছিল দুষ্কৃতীদের গ্যাংটি।

Lal Bazar police arrested Shahid who was involved in ATM robbery case | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 18, 2020 7:44 pm
  • Updated:December 18, 2020 7:44 pm

অর্ণব আইচ: প্রায় একশো সিসিটিভি ফুটেজের পিছনে ছুটে পাঁচশোর উপর ছবি বা স্লাইড পরীক্ষা করেছিলেন গোয়েন্দারা। তাতেই উদ্ধার হয়েছিল দুষ্কৃতীদের গাড়ি। কিন্তু গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম ভেঙে যারা টাকা লুঠ করেছে, তাদের ডেরায় পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব ছিল গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষে। কারণ হরিয়ানার মেওয়াটে দুষ্কৃতীদের ডেরার কাছাকাছি গেলেই যে পড়তে হবে প্রতিরোধের মুখে। তাই ছলচাতুরির আশ্রয় নিতে হয় পুলিশকে।

মথুরা স্টেশনের কাছে হাতে ব্যাগপত্তর নিয়ে আসতে দেখেই “শাহিদ” বলে ডাকেন লালবাজারের এক গোয়েন্দা আধিকারিক। পিছনে তাকাতেই তার দিকে এগিয়ে যায় গোয়েন্দা টিম। পালানোর আগেই লালবাজারের (Lal Bazar) গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে কলকাতায় এটিএম ভেঙে ১৩ লাখ টাকা লুঠেরা গ্যাংয়ের এক পাণ্ডা। শ্যামপুকুরেও একটি এটিএম লুঠের চেষ্টা করে তারা। চার বছর আগে একই ধরনের অপরাধ কলকাতায় ঘটলেও মেওয়াট গ্যাংয়ের লিংকম্যানকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেছিলেন। কিন্তু এবার মেওয়াটের মূল গ্যাংয়ের মাথা কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়ল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দলের সঙ্গে মতবিরোধের মাঝে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক বৈশালীর, তুঙ্গে তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা]

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ শাহিদ। সে মেওয়াটের ফিরোজপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। গত ২০ নভেম্বর রাতে তিলজলা থানা এলাকার একটি এটিএম থেকে আগুন ধরে যায়। তারই সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, দুষ্কৃতীরা এটিএম কাউন্টারে হানা দিয়ে গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম যন্ত্রটি ভাঙে। তার ফলেই যন্ত্রে আগুন ধরে যায়। দমকল ও পুলিশ পৌঁছানোর আগেই দুষ্কৃতীরা এটিএম থেকে লুঠ করে নিয়ে যায় ১৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের চুরি দমন শাখার আধিকারিকরা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। এলাকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে চার দুষ্কৃতীকে একটি সাদা রঙের গাড়িতে উঠতে দেখা গিয়েছিল। যদিও কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। লালবাজারের গোয়েন্দারা সিসিটিভির ফুটেজ ধরে গাড়িটিকে আক্ষরিক অর্থে ‘তাড়া’ করেন।

কলকাতা থেকে শুরু করে একের পর এক সিসিটিভি ক্যামেরা তাঁরা ঘাঁটতে থাকেন। ৩৫টি টোল প্লাজা-সহ বাকি একশোটি জায়গারও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ থেকে তাঁরা প্রায় ৫০০টি স্লাইড ও ক্লিপিংস তৈরি করেন। দেখা যায়, কলকাতা থেকে বেরিয়ে হাইওয়ে ধরে ঝাড়খণ্ড, বিহার হয়ে গাড়িটি শেষ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মথুরার মহুবন টোল প্লাজা পর্যন্ত গিয়েছে গাড়িটি। তার কাছাকাছি থেকেই সাদা রঙের গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। গাড়ির নম্বর প্লেট পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, সেটি জাল। প্রত্যেকটি রাজ্য দিয়ে আসার সময় একাধিকবার নম্বর প্লেট পালটেছে দুষ্কৃতীরা। যদিও ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর দেখে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন যে, গাড়িটি হরিয়ানার। গাড়ির ভিতর থেকে স্মার্ট কার্ডটি গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন। জানা যায়, গাড়িটি ৬ জন মালিকের হাত ঘুরেছে ও বর্তমান মালিকের কোনও রেকর্ড নেই। সেইমতো দিল্লি ও মেওয়াট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে লালবাজার।

হরিয়ানার মোটর ভেহিকেলসের মাধ্যমে একের পর এক গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবহারকারীদের হদিশ পান গোয়েন্দারা। সেইমতো মহম্মদ শাহিদ ও আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। কিন্তু চার বছর আগে এটিএএম লুঠেরাদের সন্ধানে মেওয়াটে চালানো হয়েছিল তল্লাশি। তখন ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বাহিনী। এমনকী, অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে গুলির লড়াইয়ের সামনেও পড়তে হয় গোয়েন্দাদের। সেই কারণে এবার কৌশলের আশ্রয় নেন তাঁরা। শাহিদের সঙ্গে কলকাতায় যোগাযোগ রয়েছে, সেই সূত্র ধরে তাকে ‘ট্র্যাক’ করতে শুরু করেন গোয়েন্দারা।

[আরও পড়ুন: IPS বদলি নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পথে নবান্ন]

সূত্রের মারফত গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, শাহিদ ফের কলকাতায় আসছে এটিএম লুঠের নতুন ছক কষতে। মেওয়াট থেকে মথুরা স্টেশন পর্যন্ত গাড়িতেই আসে সে। মথুরা থেকে ট্রেনে করে হাওড়া আসার কথা ছিল তার। ট্রেনে ওঠার আগেই গোয়েন্দারা তাকে গ্রেপ্তার করেন। ওই যুবককে জেরা করে গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম ভেঙে লুঠের গ্যাংয়ের আরও কয়েকজনকে ধরার চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই গ্যাং কলকাতার আশপাশে একাধিক জায়গায় এটিএম ভেঙে লুঠপাট চালিয়েছে। পরবর্তীকালে তাকে জেলা পুলিশও নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে। ধৃত যুবককে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement