সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ইঙ্গিতবাহী ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিষয়টি সামলাতে আসরে নেমে পড়ল তৃণমূল। শুক্রবার দুপুরে শতাব্দীর বাড়িতে গিয়ে দেখা করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এছাড়া এদিন সকালে শতাব্দীকে ফোন করেছিলেন দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ও। এসব পদক্ষেপ যে নিতান্তই সৌজন্যমূলক নয়, বরং বিশেষ কোনও উদ্দেশে, তেমনই মত রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের। যদিও সাক্ষাতের পর বেরিয়ে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ”শতাব্দীর পুরনো বন্ধু, কিছুক্ষণ গল্প করলাম। আর কিছু বলার নেই। শতাব্দী নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বৃহস্পতিবার দলের একাংশের প্রতি অভিযোগ তুলে ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন শতাব্দী রায়। লিখেছিলেন, “২০২১ খুব ভাল কাটুক। সুস্থ থাকুন, সাবধানে থাকুন। এলাকার সঙ্গে আমার নিয়মিত নিবিড় যোগাযোগ। কিন্তু ইদানিং অনেকে প্রশ্ন করছেন, কেন আমাকে বহু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। তাঁদের বলছি, আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভাল লাগে। কিন্তু মনে হয় কেউ কেউ চায় না, আমি আপনাদের কাছে যাই।” শেষ বাক্যটাই যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। সাংসদ এও জানান যে আগামী ১৬ জানুয়ারি, শনিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন তিনি।
শনিবার দিল্লি যাওয়ার কথা নিজেই জানিয়েছেন শতাব্দী রায়। তাহলে কি অমিত শাহ কিংবা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশেই দিল্লি সফর? এই প্রশ্নের উত্তরে ধোঁয়াশা রেখে শতাব্দী জানান, তিনি সাংসদ। কাজের সূত্রে দিল্লি যেতেই পারেন। তবে তার মানে এই নয় যে তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।
I am facing a lot in TMC. The Facebook post is genuine and was done by me. I am going to Delhi tomorrow. If I am going to Delhi it doesn’t mean I am joining BJP. I am a parliamentarian and I can go to Delhi: TMC MP Satabdi Roy to ANI
(Photo source: Satabdi Roy’s Facebook page) pic.twitter.com/h5tJCZp6Z7
— ANI (@ANI) January 15, 2021
যদিও সূত্রের খবর, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের সঙ্গে দেখা করবেন বীরভূমের তিনবারের সাংসদ। তাতেই জল্পনা তুঙ্গে, একুশের আগে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন শতাব্দী। যদিও দলের বিরুদ্ধে শতাব্দীর মনেও যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে, তা এতদিন গোপনেই ছিল। বরং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁকে দেখা যেত অনেক সময়। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে যে মহামিছিল করলেন, তাতেও তাঁর পাশেই হেঁটেছিলেন শতাব্দী রায়। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই ‘বেসুর’ শোনা গেল বীরভূমের সাংসদের গলায়।
বীরভূমের রাজনৈতিক অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সম্প্রতি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে নাকি শতাব্দী রায়ের সম্পর্ক বিশেষ ভাল যাচ্ছিল না। পরস্পরের মধ্যে ঠিকঠাক যোগাযোগ, সমন্বয়ের অভাবও হচ্ছিল। বিষয়টি মোটেই ভাল চোখে দেখেননি সাংসদ। এই জটিলতার মাঝেই কি তাহলে শতাব্দীর মন বদলে গেল? বিষয়টি নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের বক্তব্য, ”দলে নেতাদের কোন দাম নেই, দলের কর্মীরাই সব। আর কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, এটা ঠিক নয়। এমপি ল্যাডের টাকা সব শতাব্দীই খরচ করে। আর ওঁর কোনও অভিযোগ থাকলেও আমাকে লিখিতভাবে জানায়নি। এখনও দলে আছে বা দল ছেড়ে যাওয়ার কথাও বলেনি। তাই কোন মন্তব্য করব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.