রমেন দাস: ভোটের দামামা বাজার পর থেকেই চর্চায় উত্তর কলকাতা। বার বার আলোচনায় উঠে এসেছে সেখানকার রাজনৈতিক সমীকরণ। ভোটের দুপুরে আচমকাই শিরোনামে এহেন উত্তর কলকাতা। বেলেঘাটার ‘বাহুবলী’র অফিসে আচমকাই হাজির তৃণমূলের তারকা প্রচারক কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। খবর পাওয়া মাত্র সেখানে হাজিন হন তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়(Sudip Banerjee) ও বিধায়ক পরেশ পাল। হঠাৎ এই ‘বৈঠক’ কেন, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
রাজু নস্কর বাহুবলী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। কান পাতলেই শোনা যায়, উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের ভোট মেশিনারি নাকি তিনিই পরিচালনা করেন। কার্যত বুথে বুথে দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি। এহেন রাজু এবার ভোটের সকাল থেকেই নিজের অফিসে বসে। তবে কি এবার নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি? সে কথা অবশ্য় মানতে নারাজ রাজু নিজেই। বলছেন, “এখন তো মাল্টিমিডিয়ার যুগ। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপেই সব করা যায়। তার জন্য বুথে যেতে হয় না।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “মানুষ ভোট দিচ্ছেন। গত ৫ বছরে সুদীপদা সংসদ থেকে টাকা এনেছেন, মানুষের উন্নয়ন করেছেন। সেই মতো মানুষ ভোট দিচ্ছে।” জল্পনা আরও বাড়ে যখন ভোটের দুপুরে তাঁর অফিসে হঠাৎই হাজির হন কুণাল ঘোষ। যিনি আবার একসময় দাবি করেছিলেন, উত্তর কলকাতা থেকে যেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে অন্য কাউকে টিকিট দেওয়া হয়। তৃণমূলের প্রাক্তন মুখপাত্রের গলায় শোনা গিয়েছিল সদ্য তৃণমূলত্যাগী তথা উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা। এর জেরে দলের রাজ্য সম্পাদক এবং তারকা প্রচারক পদ থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তারকা প্রচারক হিসেবে ফিরেও আসেন। সুদীপের হয়ে প্রচারও করেছেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুদীপ-কুণালকে ডেকে সাফ জানিয়েছিলেন, “একসঙ্গে কাজ করতে হবে। উত্তর চাই-ই।” এহেন কুণাল রাজুর অফিসে যাওয়ার পরই চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে সেখানে আসেন বিধায়ক তাপস পাল এবং বিদায়ী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
হঠাৎ ‘বৈঠক’ নিয়ে কুণাল বলছেন, “রাজু আগে বুথে-বুথে ঘুরতেন। এখন তো বয়স হয়েছে, রিমোট কন্ট্রোলে ভোট হয়ে যায়। এখানে কোনও বৈঠক হয়নি।” রাজুর অফিসে কুণালের আগমনের খবর পেয়ে সেখানে আসেন সুদীপ-পরেশ। যদিও সুদীপ বলছেন, এটা কোনও বৈঠকই নয়। কোনও সমীকরণ নেই। ভোটের দিন সব জায়গায় যাই। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে এসেছিলাম। কুণাল বলল, এখানে আছে, তাই এলাম।” একই সুর কুণাল ঘোষের গলাতেও। বলছেন, “সুদীপদা সব জায়গাতেই যায়। এখানেও এলেন। আর শুভেন্দু যে কয়েকজনের নাম করে হুমকি দিয়েছিল তার মধ্যে রাজু অন্যতম। ভোটের দিন যাতে ফাঁসিয়ে না দেয়, তাই আসা।” এদিকে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী সুদীপ বলছেন, “নবার সাংসদ হয়েছি। তৃণমূল জিতবে। রাজু মাঠে থাকলে মার্জিন হয়তো আরও বাড়ত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.