সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্যত দলের অবস্থানের উলটো পথে গিয়ে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচির (Koustav Bagchi) গ্রেপ্তারির বিরোধিতা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। তরুণ কংগ্রেস নেতা ‘অসভ্যতা’ করেছেন সেটা মেনে নিয়েও কুণাল বলছেন, ওকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো ঠিক হয়নি। এতে কৌস্তভেরই লাভ। যদিও তৃণমূলের তরফে সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, কৌস্তভ বাগচি আসলে বিকৃত মানসিকতার। তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কুরুচিকর আক্রমণের অভিযোগে শনিবার ভোররাতে কৌস্তভ বাগচিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও এদিন বিকালেই হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু জামিন পেলেও তরুণ কংগ্রেস নেতার এই গ্রেপ্তারি যে আসলে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির হাতে অস্ত্র দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্র তুলে দেবে, সেটা ভালমতোই আন্দাজ করতে পেরেছেন কুশলী রাজনীতিক কুণাল (Kunal Ghosh)। আপাতত ভাঙা পা নিয়েই হাসপাতালে ভরতি তিনি। সেখান থেকেই নিজের ফেসবুক পেজে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এই গ্রেপ্তারির বিরোধিতা করেন।
কুণাল ফেসবুকে লেখেন, “কৌস্তুভ অন্যায় করেছে। মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে ওই ধরণের চরম কুৎসা বরদাস্ত করা যায় না। কিন্তু আমাদের ছাত্র-যুবরা কৌস্তভের অসভ্যতা বুঝে নিতে পারত। কিন্তু পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারি ঠিক হল না। এতে কৌস্তুভ প্রচার পাবে, বিরোধী শক্তির অশুভ আঁতাতের কুৎসিত রাজনীতির হাতিয়ার হবে, একাংশের মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট প্রচারের মুখ হবে, কিছু মানুষের সহানুভূতি পাবে। গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবে তারা।” এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) গ্রেপ্তারি পর্বের কথা মনে করিয়ে দেন কুণাল। তিনি লেখেন, ‘‘যে দিন পুলিশ সজলের বাড়ির দরজা ভেঙেছিল, আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। পরে প্রমাণিত হয়েছে আমার প্রতিবাদ সঠিক ছিল। লাভ হয়েছিল সজলের। মধ্য কলকাতায় একটি ওয়ার্ড জিতেছিল বিজেপি। সে দিন পুলিশি অভিযানের ধরন ছিল ভুল।’’ কুণাল বলছেন, সেই পর্ব থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল দলের। যদিও কুণালবাবু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণভাবে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। দলের মতামত নয়।
যদি কুণালের এই মতের সঙ্গে সহমত নয় তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) । দলের তরফে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja) বলেন, “এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকলের মুখ্যমন্ত্রী। আজ প্রত্যেকে অপমানিত। ওর মন্তব্য লজ্জাজনক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু এই রাজ্যের অভিভাবক নন, তিনি দেশের প্রথম সারির নেত্রী। যে রাজ্যে মায়েদের পুজো করা হয়, মায়েদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়, যে মানুষটা সারা জীবন আত্মত্যাগ করেছে, কীভাবে বছরের পর বছর তাঁর প্রতি কুৎসা করা হয়েছে, যেভাবে অপমান করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ তো আমরা জানাবই। আমরা মনে করি রোদ্দুর রায় এবং কৌস্তভ বাগচি সমান অপরাধে অপরাধী। ওর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ তো হবেই। আইন যেটা বলে সেই মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” কুণালের মতামত যে একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত, দলের অবস্থান নয় সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন শশী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.