শুভঙ্কর বসু: বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে পাঁচিল তোলার কাজে স্থগিতাদেশ নয়। রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
বিশ্বভারতীতে চলতে থাকা অচলাবস্থা কাটাতে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছিল আদালত। সেই কমিটির নির্দেশমতো মঙ্গলবার থেকে বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে পাঁচিল ও ফেন্সিংয়ের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এদিন হঠাৎই জরুরী ভিত্তিতে সেই কাজে স্থগিতাদেশ চেয়ে প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।
রাজ্যের তরফে অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, পাঁচিল দেওয়ার কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সমস্যা হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। এদিন কোনওভাবে জনতাকে সামাল দেওয়া গেলেও ভবিষ্যতে কীভাবে তাদের সামাল দেওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই এই কাজে স্থিতাবস্থা বা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করুক আদালত। রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলের তরফে এমন বক্তব্য শুনে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন,”বিক্ষুব্ধ জনতা আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। পুলিশ যদি সেটা না পারে তাহলে আদালতকে তা করতে হবে। আমরা গুলি খেলেও বিক্ষুব্ধ জনতাকে আদালতের মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে দেব না। কারণ আদালতের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।”
এদিকে ২০১৭-তে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর আবেদনের ভিত্তিতে বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এদিন সে ব্যাপারে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, “পরিবেশ আদালত পৌষমেলা বন্ধের নির্দেশ দিলেও হাই কোর্টের সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার অধিকার রয়েছে। কারণ এক্ষেত্রে কবিগুরুর ভাবনা ও শান্তিনিকেতনের ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” এছাড়াও বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য রক্ষা ও অচলাবস্থা কাটাতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর ও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে নিয়ে একটি কমিটি গড়েছিল আদালত। সেই কমিটি থেকে এদিন অব্যাহতি চেয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারাল কিশোর দত্ত। বুধবার বেলা দেড়টা থেকে ফের মামলার শুনানি ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.