অভিরূপ দাস: কোভিড (Covid-19) আক্রান্তের চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালে লাগামছাড়া খরচ নিয়ে অভিযোগ থামছে না। ইতিমধ্যেই এই খরচের ঠেলায় নাভিশ্বাস উঠছে অনেক পরিবারেরই। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যে সংক্রমণের গোড়াপত্তনের সাড়ে ছয় মাস পরেও এই সমস্যার সমাধান এখনও করা যায়নি। বিপি পোদ্দার হাসপাতালের (BP Poddar Hospital) বিরুদ্ধে এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হলেন প্রৌঢ়া আশা পোদ্দার।
গত ১০ থেকে ১৯ জুলাই তিনি ভরতি ছিলেন নিউ আলিপুরের ওই হাসপাতালে। প্রতিদিন ৩৫ হাজার করে মোট সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বিল করেছে হাসপাতাল। রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য খুঁটিয়ে দেখতে গিয়েই কমিশনের চক্ষু চড়কগাছ। উপসর্গহীন ওই রোগীর কোনও সমস্যাই ছিল না। না দিতে হয়েছে অক্সিজেন। না রোগীকে রাখতে হয়েছে আইসিইউতে। এমনকি রেমডেসেভির যার ১০০ মিলিগ্রামের একটি শিশির দাম প্রায় ৫,৪০০ টাকা। তাও দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি রোগীকে। তবু কেন প্রতিদিন ৩৫ হাজার চার্জ? বিপি পোদ্দারের বক্তব্য, “ওটাই প্যাকেজ। সেই অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে।” এই ঘটনায় বিপি পোদ্দারকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “কোন খাতে প্রতিদিন ৩৫ হাজার টাকা করে খরচ হল তা জানতে চাওয়া হয়েছে হাসপাতালের কাছে।”
চিকিৎসকের ফি, পিপিই-সহ কোভিড প্রোটেকশন চার্জ, নমুনা পরীক্ষার খরচ বেঁধে দেওয়ার সংক্রান্ত একের পর এক অ্যাডভাইসরি জারি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। স্বাস্থ্য কমিশন সূত্রে খবর, এরপরও ঘুরপথে রোগীর পরিজনের কাছ থেকে নানা ভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে জিটি রোডের কমলা রায় হাসপাতালকেও। তনুশ্রী পাল নামে এক প্রসূতি ভরতি ছিলেন সেখানে। ২০১৯-এর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তনুশ্রী ভরতি হন ওই হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, ইউএসজি (USG) করার সময় এতটাই জোর দেওয়া হয় যে পেটের ভিতরেই বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনাতেও ওই হাসপাতালকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ থাকলে রোগীকে মেডিক্যাল কাউন্সিলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.