ছবিটি প্রতীকী
অর্ণব আইচ: বিধায়ক পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা লুঠ করল দুষ্কৃতীরা। ওই ব্যবসায়ীর কর্মচারীকে কলকাতা থেকে নদিয়ায় ডেকে নিয়ে গিয়ে ৮২ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তিনি বাধা দিলে গুলি করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনাটি নদিয়ার গয়েশপুরে ঘটলেও ওই ব্যবসায়ী এই বিষয়ে বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তিনি ওই বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিধায়ক ঘটনাটি শুনে হতবাক হয়ে যান। ফলে ওই ব্যবসায়ী পুলিশকে অভিযোগপত্রেই জানিয়েছেন যে বিধায়ক কিছুই জানেন না। বিধায়কের নাম করে এক দুষ্কৃতী তাঁকে ফোন করেছেন। বিধায়কের ভাইপো পরিচয় দিয়ে তাঁর কর্মচারীর কাছ থেকে টাকা লুঠ করেছে। ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ব্যবসায়ী বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার লোয়ার রেঞ্জের বাসিন্দা। তাঁর নির্মাণ ও প্রোমোটারির ব্যবসা। কসবার বি বি চ্যাটার্জি রোডে একটি অফিসও রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, কিছুদিন আগে তাঁর এক বন্ধু ফোন করে জানান, রাজ্যের এক বিধায়ক তাঁকে একটি কাজের জন্য ফোন করতে পারেন। পরেরদিনই একটি মোবাইল নম্বর থেকে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ফোন আসে। এক ব্যক্তি নিজেকে নদিয়া জেলার একজন বিধায়ক বলে পরিচয় দেন। বলেন, পুরসভার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণের কাজ আছে, যা খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। ব্যবসায়ী তাতে রাজি হয়ে যান। তখন ওই ব্যক্তিটি বলেন, হয় তাঁকে নিজেকে নদিয়ায় যেতে হবে অথবা কাউকে টেন্ডার(Tender)-এর কাগজপত্র নেওয়ার জন্য পাঠাতে হবে। সঙ্গে পাঠাতে হবে ৮২ হাজার টাকা। এই বিষয়ে একাধিকবার দু’জনের মধ্যে ফোনে কথা হয়। আর তার পরেরদিনই ব্যবসায়ীরই এক কর্মচারী রওনা দেন নদিয়া।
পুলিশের কাছে আসা অভিযোগ অনুযায়ী, নদিয়া জেলায় পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই ওই কর্মচারীকে এক ব্যক্তি ফোন করে বলে, তাঁকে গয়েশপুরে যেতে হবে। ওই কর্মচারী গয়েশপুরে পৌঁছতেই এক যুবক বাইক নিয়ে আসে। নিজেকে বিধায়কের ভাইপো বলে পরিচয় দেয় সে। বাইকে করে ওই কর্মচারীকে একটি নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর কাকা তাকে টাকা নিয়ে যেতে পাঠিয়েছেন বলে জানান। তখন ওই কর্মচারীটি যুবককে টেন্ডারের কাগজপত্র দিতে বলেন। কিন্তু, ওই যুবক কোনও নথি দিতে অস্বীকার করে। এর মধ্যে সেখানে পৌঁছে যায় ওই যুবকের কয়েকজন সঙ্গী। তারা ওই কর্মচারীর সঙ্গে থাকা ৮২ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলেই গুলি করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। লুঠপাট করা হয় টাকা। কর্মচারী ব্যবসায়ীকে বিষয়টি জানালে তিনি ওই নম্বরটিতে ফোন করতে থাকেন। কিন্তু, মোবাইল ফোন বন্ধ। শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ীর সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওই বিধায়কের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করেন। এরপরই ওই ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন যে কোনও দুষ্কৃতী নিজেকে বিধায়ক পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করেছিলেন। সম্ভবত বাইকে করে আসা ওই ‘ভাইপো’ই বিধায়ক সেজে ফোন করেছিল ব্যবসায়ীকে। গোয়েন্দাদের একটি টিম ইতিমধ্যে গয়েশপুরে গিয়েছে। ব্যবসায়ীর বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.