অর্ণব আইচ: গেমিং অ্যাপ জালিয়াতির মূল অভিযুক্ত আমির খানের বিরুদ্ধে ই-মেল করে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। তারই ভিত্তিতে ফের নতুন একটি জালিয়াতির মামলায় গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খানকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
আমির খানের বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তল্লাশি করে প্রথমে উদ্ধার করে ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। এরপর থেকে কলকাতা পুলিশ ও ইডি বিভিন্ন সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রাখা প্রায় একশো কোটি টাকার সন্ধান পায়। সেগুলির একটি অংশ উদ্ধার করাও হয়। সম্প্রতি আমির খানের ১২০০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয় ২০ কোটি টাকা। পার্ক স্ট্রিটের একটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অভিযোগে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা আমির খানকে গ্রেপ্তার করেন। শুক্রবার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের পর আমির খানকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়।
পার্ক স্ট্রিট থানার মামলায় তার জামিনের আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতের আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। একইসঙ্গে তিনি আদালতে জানান, আমির খান গেমিং অ্যাপের নামে যাঁদের টাকা জালিয়াতি করেছে, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী পুলিশকে ই-মেল করে তাঁদের দুরাবস্থার কথা জানিয়েছেন। গেমিং অ্যাপ চক্রে তাঁরা লগ্নি করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই অ্যাপটি আপগ্রেড করার নাম করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। একজন ই-মেল করে কলকাতা পুলিশকে জানান যে, তাঁর ৪০ হাজার টাকা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতি করা হয়েছে। আমির খানের বিরুদ্ধেই উঠেছে অভিযোগের আঙুল। তারই ভিত্তিতে মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
এই মামলায় আমির খানের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী ব্যাঙ্কশাল আদালতে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানান। আমিরের আইনজীবীর দাবি, এতদিন পুলিশ আমিরকে জেরা করে কিছু পায়নি। দু’পক্ষের আবেদন শুনে পার্ক স্ট্রিটের মামলায় ২১ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজত ও হেয়ার স্ট্রিটের মামলায় ২১ অক্টোবর পর্যন্তই পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত হাজারের উপর যে ভাড়া বা মিউল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উদ্ধার হয়েছে, সেগুলির প্রবর্তক বা ‘ইন্ট্রোডিউসার’ হচ্ছে আমির খান নিজেই। সে ও তার সঙ্গীরাই অ্যাপ জালিয়াতির কয়েক কোটি টাকা বিদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে রাখে। দুবাইয়ে বসে আমির খানকে সাহায্য করত তারই এক সহযোগী শুভজিৎ শ্রীমানি। ফলে আমিরের সঙ্গে দুবাইয়ের প্রত্যক্ষ যোগ মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। এখনও পর্যন্ত আমির-সহ আটজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের মতে, অ্যাপ জালিয়াতির ঘটনায় আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী, যাঁদের টাকা খোয়া গিয়েছে, তাঁরা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। তার ভিত্তিতেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও আমিরের অন্য সঙ্গীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.