ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: ফের কলকাতায় ভুয়ো পুলিশের (Fake Police) কীর্তি ফাঁস। নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক যুবককে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা ও বাইক হাতিয়ে নিয়েছিল এক ব্যক্তি। তাকে গ্রেপ্তার করলেন দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানার আধিকারিকরা। অন্যদিকে আবারও এ শহরে মিলল ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ। পূর্ব কলকাতার তপসিয়া থেকে আমেরিকায় ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন করে প্রচুর ডলার হাতিয়ে নেয় জালিয়াতরা। তপসিয়ায় তল্লাশি চালিয়ে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ভুয়ো কল সেন্টার থেকে উদ্ধার হয় পাঁচটি ল্যাপটপও।
যাদবপুর থানা (Jadavpur PS) পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ সেজে প্রতারণা করা ধৃতের নাম কালীপদ বর। যদিও সে সবাইকে নিজের পরিচয় দিত বিনয় চক্রবর্তী নামে। এই মাসেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় যাদবপুরের বিজয়গড়ের বাসিন্দা এক ব্যক্তির। তাঁর ছেলে পুলিশে চাকরির চেষ্টা করছে। কালীপদ বর নিজেকে কলকাতা পুলিশের আধিকারিক বিনয় চক্রবর্তী বলে পরিচয় দেয়। জানায়, তার সঙ্গে কলকাতা পুলিশের কর্তাদের পরিচয় রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সে ছেলের চাকরি করে দেবে। সেইমতো অভিযোগকারীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও তাঁর বাইকটি নিয়ে নেয় সে। কিন্তু দু’সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরও চাকরির ব্যাপারে কোনও আশ্বাস দিতে পারেনি সে। অভিযোগকারী খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন যে, ওই ব্যক্তির নাম আদৌ বিনয় চক্রবর্তী নয়।
এরপরই এই ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) নরেন্দ্রপুর এলাকার বাজবরণতলায় সন্ধান মেলে ওই ব্যক্তির। সেখানেই তল্লাশি চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত জুন মাস থেকে পরপর কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছে ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো আইপিএস, ভুয়ো সরকারি কর্তা ও ভুয়ো পুলিশ অফিসার। এবার ফের পুলিশের জালে ভুয়ো পুলিশ। খোয়া যাওয়া টাকা ও বাইকও পুলিশ উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে, গত কয়েক মাস ধরে ভুয়ো কল সেন্টার নিয়ে সতর্ক প্রত্যেকটি থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ। লালবাজারের কড়া নির্দেশ, কলকাতার কোথায় কোথায় ভুয়ো কল সেন্টার চলছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। সেই সূত্র ধরেই সম্প্রতি তপসিয়া থানার পুলিশের কাছে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর অভিযোগ আসে। সেইমতো সোমবার রাতে পুলিশ তপসিয়ার মহেন্দ্র রায় লেনে হানা দেয়। পুলিশের অভিযোগ, একটি ঘর ভাড়া করেছিল পাঁচ অভিযুক্ত। সেখানেই ল্যাপটপ বসিয়ে তারা তৈরি করে ভুয়ো কল সেন্টার। এলাকার বাসিন্দারা জানতেন, সাধারণ কল সেন্টার চালায় তারা। যদিও তারা আমেরিকার বিভিন্ন ব্যক্তিকে ইন্টারনেট কল করত। তার ফলে তাদের নম্বরের হদিশ মিলত না।
ফোন করে তারা নিজেদের একটি সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিত। মার্কিনিদের বলা হত, তাঁদের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ দেখভাল করছে তারা। তার জন্য একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে। ওই অ্যাপটি ডাউনলোড করলেই তাঁর কম্পিউটার বা ল্যাপটপের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নিত তারা। অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার দেওয়ার নামে ম্যালওয়্যারের সাহায্যে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার অকেজো করে দিত। সাদা অথবা কালো হয়ে যেত স্ক্রিন। এর পরই ফের ইন্টারনেট কল করে ই ওয়ালেটে ডলার পাঠাতে বলত। বাধ্য হয়ে মার্কিনিরা বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডলার পাঠাতেন। আর সেই ডলার হাতিয়ে নিত জালিয়াতরা। যদিও পুলিশের ধারণা, এই ভুয়ো কল সেন্টারের পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছে। তাদেরও সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.