সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়েদের খোলামেলা পোশাকেই বাড়ছে ধর্ষণ, এক তরুণীকে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠল আরেক প্রৌঢ়ার মহিলার বিরুদ্ধে৷ শুধু তাই নয়, শর্টস পরায় অজ্ঞাতপরিচয় ওই মহিলার হাতে মারও খেতে হল তরুণীকে৷ দক্ষিণ কলকাতার লর্ডসের মোড়ের এই ঘটনায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়েছে৷ বর্তমান যুগেও কীভাবে এমন পোশাক ফতোয়া জারি হতে পারে, উঠছে সেই প্রশ্ন৷
বনগাঁর বাসিন্দা ওই তরুণী বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন৷ পড়াশোনার জন্য বনগাঁ থেকে আপাতত কলকাতাতেই থাকেন তিনি৷ আগে সল্টলেকে একটি হস্টেলে থাকতেন৷ তবে বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কে হস্টেলে থাকেন তিনি৷ গত বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ লর্ডসের মোড়ে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বেরিয়েছিলেন ওই তরুণী৷ তাঁর পরনে ছিল একটি শর্টস৷ সেই সময় এক অপরিচিত মহিলার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়৷ তরুণীর দাবি ওই মহিলাকে তাঁকে পোশাক নিয়ে নানা কথা শোনান৷ মহিলা বলেন, ‘‘মেয়েরা এভাবে শরীর দেখিয়ে বেড়ায় বলেই ছেলেদের ধর্ষণের আসক্তি বাড়ছে৷’’
একথা শুনেই রেগে যান উচ্চশিক্ষিত তরুণী৷ তিনি বিরোধিতা করতে শুরু করেন৷ মহিলা তাতে চটে যান৷ তরুণীকে সপাটে চড় কষিয়ে বসেন তিনি৷ তরুণী মহিলাকে বলেন, ‘‘আপনি যা বলছেন তা ভুল৷ মারধর করা আসলে অপরাধ৷’’ মহিলা কোনও কথা না শুনে আবারও তরুণীকে মারধর করতে শুরু করেন৷ চিৎকার চেঁচামেচিতে রাস্তায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান ‘মাতব্বর’ ওই মহিলা৷ এরপর আক্রান্ত ওই তরুণী তাঁর মেসে চলে যান৷ বান্ধবীদের সঙ্গে গোটা ঘটনাটি আলোচনা করেন তরুণী৷ থানায় অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ সেই অনুযায়ী লেক থানার দ্বারস্থ হন ওই তরুণী৷ তরুণীর বয়ান রেকর্ডও করা হয়েছে৷ ওই মহিলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ তবে এখনও তার খোঁজ পায়নি পুলিশ৷
দিনকয়েক আগে পোশাক ফতোয়া জারি হয়েছিল যাদবপুরের একটি মেসে৷ আধুনিক খোলামেলা পোশাক পরায় এক তরুণীকে অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল মেসমালিকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে৷ যাদবপুর থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই মেসমালিকের স্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলে৷ আধুনিক যুগের একের পর এক পোশাক ফতোয়া জারির ঘটনা কেন ঘটছে, তা নিয়ে সংশয়ে শুভবুদ্ধিসম্পন্নরা৷ আদৌ কি পোশাকের সঙ্গে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্যতম অপরাধের কোনও সম্পর্ক রয়েছে, লর্ডসের মোড়ের ঘটনায় আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে এই প্রশ্ন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.