অর্ণব আইচ: আতঙ্কের নাম করোনা। ভাইয়ের ধারণা হয়েছিল যে, দাদার মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আর সেই আতঙ্কেই খবরটি কাউকে জানাননি ভাই। চোখের সামনে পচে যাচ্ছিল দাদার লাশ। বরং দুদিন ধরে দাদার দেহ আগলে বসে ছিলেন ভাই। বুধবার রাতে আলিপুর বডিগার্ড লাইনের ক্যান্টিনের ভিতর থেকে পচাগলা দেহ উদ্ধারের কিনারা হল। এতে রবিনসন স্ট্রিটের ছায়াও দেখছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সেরিব্রাল হ্যামারেজের কারণে মৃত্যু হয়েছে সমীর সিংহ নামে ওই ব্যক্তির। তাঁকে খুন করা হয়নি। দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। ৩৬ থেকে ৪৮ ঘন্টা আগে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। বাঁকুড়ার বাসিন্দা সমীর ও রতন দুই ভাই মিলে কাজ করতেন আলিপুর বডিগার্ড লাইনের ওই ক্যান্টিনে। বুধবার রাতে সমীরের দেহের উপর বালিশ চাপা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। মৃতর ভাই রতনের মানসিক অবস্থা বিশেষ স্থিতিশীল নয়। বুধবার রাতে দাদার দেহ উদ্ধারের পর ওই যুবক পুলিশকে জানান, তিনি পাশের ঘরেই ছিলেন। দাদার দেহ থেকে এত দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল যে, তিনি দেহটির মুখে বালিশ চাপা দেন। দাবি করেন, দাদার জ্বর এসেছিল। এর পরেই দাদা অসুস্থ হয়ে মারা যান। যদিও ওই ব্যক্তির করোনা হয়েছিল কি না, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
চিকিৎসকরা পুলিশকে জানান, মৃত্যুর এক ঘন্টা পর থেকে দেহে করোনার ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তাই পচাগলা দেহের করোনা পরীক্ষা করে লাভ নেই। অবশ্য এখনও কোনোও আত্মীয় দেহটি গ্রহণ করে শেষকৃত্য করতে রাজি হননি। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা চোখের সামনে দাদার মৃত্যু হতে দেখে করোনা আতঙ্কে পড়ে যান ওই যুবক। কারণ, ইতিমধ্যেই আলিপুর বডিগার্ড লাইনের একাধিক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই কারণে বাসিন্দাদের মধ্যে এমনিতেই করোনা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। দাদা করোনা আক্রান্ত হলে ভাইকেও কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হবে। তার পরও বাড়িতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। সেই আতঙ্কেই দাদার মৃত্যুর খবর কাউকে দেননি ভাই। এখনো পর্যন্ত ওই যুবকের শরীরে কোনও উপসর্গ নেই। তবু তাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.