স্টাফ রিপোর্টার: শিল্পায়নের স্বার্থে রাজ্যে লগ্নি টানতে বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS)। সেই মেগা ইভেন্টের মুখে কলকাতা (Kolkata)ও সাগরের মধ্যে নৈশকালীন জাহাজ চলাচল শুরু করার কথা জানাল কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যার্জি বন্দর। সোমবার বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, হলদিয়ার পর কলকাতা ও সাগরের মধ্যেও রাতে জাহাজ চলাচল শুরু করতে চাইছেন তাঁরা। এর জন্য চেন্নাই আইআইটি’র সহায়তায় ‘নাইট নেভিগেশন সিস্টেম’ তৈরির কাজ চলছে। আগামী ছ’মাসের মধ্যেই এই পথে রাতে জাহাজ চলাচল শুরু হবে বলে আশা তাঁর।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে কুমার জানান, কাজের সুবিধা ও পরিবেশের কারণে সম্প্রতি ‘গ্রেট প্লেস টু ওয়ার্ক’ স্বীকৃতি মিলেছে কলকাতা বন্দরের। তাঁর কথায়, “এই স্বীকৃতি এর আগে পেয়েছে টাটা স্টিল, এনটিপিসি, ইন্ডিয়ান অয়েল, অ্যাডোবের মতো দেশের প্রথম সারির কর্পোরেট সংস্থারা। এবার দেশের সেরা ১০০টি সংস্থার তালিকায় নাম তুলেছি আমরাও।” বস্তুত দেশের একমাত্র নদী বন্দর হিসাবে যাবতীয় প্রতিকূলতাকে টপকে গত কয়েক বছরে রীতিমতো উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য করেছে কলকাতা বন্দর।
করোনাকালেও (Coronavirus)খিদিরপুর ও হলদিয়া ডকের মিলিত বাণিজ্যের পরিমাণ চোখে পড়ার মতো। যার পিছনে রয়েছে ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে মাঝসমুদ্রে পণ্য ওঠানো-নামানো, বার্থগুলির যান্ত্রিকীকরণ, ‘মাই পোর্ট’ অ্যাপ ও শুল্ক-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাণিজ্য বান্ধব পরিকাঠামো চালু। বিনীত কুমার জানান, ২০-২১ আর্থিক বর্ষে ১২০ কোটি টাকা লাভ করেছে কলকাতা বন্দর (Kolkata Port)। শতকরা হিসাবে বৃদ্ধির হার ১৫ শতাংশ। তাঁর দাবি, কোভিড ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে জাহাজ চলাচল কমে যাওয়া সত্ত্বেও ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু ও আধুনিকীকরণের ফলেই এই ব্যবসা বৃদ্ধি।
রাজ্যে নতুন লগ্নি ও বাণিজ্যের প্রশ্নে কলকাতা ও সাগরের মধ্যে রাতে জাহাজ চলাচল নিয়ে তিনি যে রীতিমতো আশবাদী, তা এদিন বুঝিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান। বন্দর সূত্রে খবর, রাতে চলাচল না করতে পারায় এখন দুপুরের পর কোনও জাহাজ এই পথে রওনা দিতে পারে না। একদিকে স্যান্ডহেড ও অন্যদিকে খিদিরপুর ডকে অপেক্ষা করতে হয়। সেক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের ডলার দিতে হয় ভাড়া হিসাবে। নতুন ‘নাইট নেভিগেশন সিস্টেম’ চালু করা গেলে এই খরচ বেঁচে যাবে সংস্থাগুলির। একইসঙ্গে জাহাজপথে জোয়ার ভাঁটা, ঢেউয়ের উচ্চতা, ঝড়ের আগাম তথ্য পেতে একটি ‘টাইড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালুর কথাও জানান কুমার।
পাশাপাশি, ১৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন কয়েকটি প্রকল্প শুরুর কথা জানান তিনি। এর মধ্যে ৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প হবে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে। যার অন্যতম ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাঝেরহাটে নিজস্ব শতবার্ষিকী হাসপাতাল চত্বরে পৃথক একটি ৩০০ শয্যার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.