অর্ণব আইচ: আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ও তার সঙ্গে অ্যালোভেরা। এই দু’টি মূল উপাদান দিয়েই স্যানিটাইজার তৈরি করতে চাইছে পুলিশ। যদি স্যানিটাইজারের অভাব হয় বাজারে, যাতে স্যানিটাইজার কম না পড়ে, তার জন্যই এমন অভিনব উদ্যোগ কলকাতা পুলিশ।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, করোনা ভাইরাস রোধে যে কোনও মানুষই এই পদ্ধতিতে তৈরি করতে পারেন স্যানিটাইজার। বাজারের চেয়েও তা দামে অনেক সস্তা পড়বে। পুলিশ জানিয়েছে, লালবাজারের নির্দেশে কলকাতার প্রত্যেকটি থানার পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মীর হাত ধুতে হবে স্যানিটাইজার দিয়ে। যাঁরা থানায় অভিযোগ জানাতে অথবা অন্য কাজে আসছেন, তাঁদের হাতও স্যানিটাইজার দিয়ে ঢোকার পর প্রবেশ করতে হবে থানার ভিতর। আপাতত এই নির্দেশ পুলিশকে মানতে হবে বেশ কিছুদিন। কিন্তু তার জন্য বিপুল পরিমাণ স্যানিটাইজারের প্রয়োজন হবে। এখন লালবাজারের পক্ষ থেকে শহরের থানাগুলিকে স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। থানার অফিসারদের নিজেদের উদ্যোগেও জোগাড় করতে বলা হয়েছে স্যানিটাইজার। এছাড়াও লালবাজারে ঢোকার সময় প্রত্যেক পুলিশকর্মী, আধিকারিক ও দর্শনার্থীর হাত ধোয়ার জন্যও প্রচুর স্যানিটাইজারের প্রয়োজন। সাধারণ মানুষও করোনা ভাইরাস নিয়ে সচেতন হচ্ছেন। তাই স্যানিটাইজারের চাহিদা বর্তমানে তুঙ্গে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যানিটাইজার যদি বাজারে না থাকে, তা তৈরি করার ব্যবস্থা করেছেন বহু পুলিশকর্মীই।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ‘হোম মেড’ স্যানিটাইজার তৈরির জন্য প্রয়োজন আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল। নিয়ম অনুযায়ী, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল স্যানিটাইজারে থাকতে হবে। সাধারণভাবে বাজারে যে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল পাওয়া যায়, তা ৯৯.৯ শতাংশ। তাই এই অ্যালকোহল দিয়ে স্যানিটাইজার তৈরি করতে কোনও অসুবিধাই নেই। তার সঙ্গে মেশাতে হবে ৯৮ শতাংশ অ্যালোভেরা। এমনিতে অ্যালোভেরা গাছের রস বা বাজার থেকে কেনা শুধু অ্যালোভেরা মাখলে হাতে জ্বালা করতে পারে। কিন্তু অ্যালকোহলের সঙ্গে মেশালে কোনও সমস্যা হবে না। দুই কাপ আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ও এক কাপ অ্যালোভেরা জেল একটি বাটিতে মিশিয়ে চামচ দিয়ে ঘেঁটে নিতে হবে। এর মধ্যে আট থেকে দশ ফোঁটা তেল দিলেও হবে। তার ফলে এই তরলে ভাল গন্ধ যুক্ত হতে পারে। তবে পুলিশ আধিকারিকদের মতে, তেলের বদলে পরিশুদ্ধ জল মেশালেও চলতে পারে। তাতেই তৈরি হয়ে যাবে স্যানিটাইজার। এবার ফানেল দিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে তা ঢেলে ফেললেই হল। অতি সহজেই তা হাত ধোওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
এই অ্যালকোহল ও অ্যালোভেরা জেল যেমন ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়, তেমনই পাওয়া যায় অনলাইন বিপণিতেও। ‘হোম মেড’ স্যানিটাইজার তৈরি করলে তা অনেক সস্তা হয় ও বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। আফটার শেভিং লোশনের মতো কিছু তরল স্যানিটাইজার হিসাবে ব্যবহার করা গেলেও তার দাম অনেক বেশি। তাই করোনা ভাইরাস রোধে ‘হোম মেড’ স্যানিটাইজার তৈরি করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.