Advertisement
Advertisement
পটাশিয়াম নাইট্রেট

পটাশিয়াম নাইট্রেটের কালোবাজারি, নাটের গুরু ‘সাহুবাবু’

তদন্তে বালেশ্বরে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Kolkata police STF launch hunt to nab explosive exporter
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 22, 2019 9:01 am
  • Updated:March 22, 2019 10:30 am  

অর্ণব আইচ: বালেশ্বরের সাহুবাবু। এই ব্যক্তির কাছ থেকেই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পটাশিয়াম নাইট্রেট পেয়েছিল বারাসতের রবিউল ইসলাম। ওড়িশার এই রাসায়নিকের কারবারি চক্রের নাটের গুরু কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। এ ছাড়াও চলছে পূর্ব মেদিনীপুরের এক এজেন্টের সন্ধান। ধৃত রবিউল লালবাজারের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর আধিকারিকদের জানায়, ওড়িশার ‘সাহুবাবু’ ও তার মধ্যে যোগাযোগ করিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের ওই এজেন্ট। তার মাধ্যমেই ওই বিস্ফোরক বাবদ ‘সাহুবাবু’র সংস্থাকে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিল রবিউল।

[প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ চরমে, কোচবিহারে বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে ধুন্ধুমার]

Advertisement

মূলত উত্তর ২৪ পরগনার অবৈধ বাজির কারখানায় এই পটাশিয়াম নাইট্রেট পাচার করা হত বলে খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাই তদন্তের খাতিরে ‘সাহুবাবু’র সন্ধানে বালেশ্বরে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা। একইসঙ্গে ভোটের আগে পটাশিয়াম নাইট্রেটের কালোবাজারি নিয়েও গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেছেন। কারণ, চিৎপুর থেকে উদ্ধার হওয়া এই বিস্ফোরক যে অবৈধভাবেই বাইরে পাচার হচ্ছিল, সেই বিষয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। অবৈধ বাজির কারখানার আড়ালে এই বিস্ফোরক দিয়ে বোমা তৈরির ছক কষা হয়েছিল কি না, তা গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন। কারণ, এই বিশেষ রাসায়নিক গন্ধক ও কাঠকয়লার সঙ্গে মিশিয়ে বারুদ তৈরি হয়। তা দিয়ে যেমন অবৈধ বাজি তৈরি হয়, তেমন জঙ্গি বা মাওবাদীদের হাতে এই বারুদ বা রাসায়নিক পড়লেও তার ফল হতে পারে মারাত্মক। তাই কলকাতা থেকে পটাশিয়াম নাইট্রেট উদ্ধারের সঙ্গে জঙ্গিযোগের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন।

শুক্রবার গভীর রাতে উত্তর কলকাতার চিৎপুরের বিটি রোডে একটি মালবাহী গাড়িকে দাঁড় করান এসটিএফ আধিকারিকরা। সেই গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ২৭ বস্তা পটাশিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরক। হাজার কিলোরও বেশি পরিমাণ ওই বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। ওড়িশার বালেশ্বর থেকে আসা ওই গাড়ির চালক ইন্দ্রজিৎ ভুই ও খালাসি পদ্মলোচন দে-কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জেরা করেই জানা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার মালিকাপুরের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের কাছে পাচার হচ্ছিল এই বিস্ফোরক। সেই সূত্র ধরে গোয়েন্দারা মালিকাপুরে হানা দেন। তথ্য অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ ও এসটিএফ গ্রেফতার করে রবিউলকে। জেরার মুখে সে জানায়, এই কারবারে মূল চক্রী ও এজেন্ট পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। সে বালেশ্বরের একটি সংস্থার কর্ণধার ‘সাহুবাবু’র সঙ্গে ছক কষেই কলকাতা হয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় পাচার করত এই বিস্ফোরক।

প্রথমে জেরার মুখে রবিউল গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করে যে, পটাশিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয় নাইট্রোজেন সার হিসাবে। পুলিশের দাবি, রবিউল নিজেও বাজির কারবারের সঙ্গে জড়িত। তাই অবৈধ বাজির কারখানায় পাচার হত ওই পটাশিয়াম নাইট্রেট। গোয়েন্দারা জেনেছেন, উত্তর ২৪ পরগনায় রবিউলের প্রচুর এজেন্ট ছিল। তারা নৈহাটি ও অন্য কয়েকটি জায়গায় অবৈধ বাজির কারখানায় ওই রাসায়নিক পাচার করত। ওই কারখানাগুলিতে পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু কারিগর এসে বাজি তৈরি করত। পূর্ব মেদিনীপুরের সেই বিশেষ এজেন্ট ওই কারিগরদের সরবরাহ করত কি না, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে রাজ্যের বেশ কয়েকটি অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এর পরই বিভিন্ন সময় বাজির কারখানার আড়ালে বোমা তৈরির ছক প্রকাশ পেয়েছে। ভোটের আগে এই পদ্ধতিতে বোমা তৈরি হচ্ছিল কি না, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[দুষ্কৃতীদের চুয়াত্তরটি গুলিতে দৃষ্টিহীন ওরাংওটাং, নিহত তার এক মাসের সন্তান]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement