Advertisement
Advertisement

বেলেল্লাপনায় ছাড় নেই মহিলাদেরও, বড়দিন-বর্ষবরণে সক্রিয় পুলিশ

কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ? জানুন আর সতর্ক থাকুন।

Kolkata police ready to rein trouble mongers on Christmas eve
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 21, 2017 9:05 am
  • Updated:December 21, 2017 9:05 am  

অর্ণব আইচ: বড়দিন পালন করো। বর্ষবরণও। বন্ধু আর বান্ধবীদের সঙ্গে ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াও পার্ক স্ট্রিটে। খাওয়াদাওয়া করো। আপত্তি নেই মদ্যপানেও। কিন্তু ‘নো বেলেল্লাপনা’। কলকাতা পুলিশের কঠোর নির্দেশ, কোনওমতেই রাস্তায় বেলেল্লাপনা নয়। তাই এবার বড়দিনের তিনদিন আগে থেকেই রাস্তায় বেলেল্লাপনা যাতে না হয়, সেই বিষয়ে কঠোর হচ্ছে পুলিশ। এমনকী, মদ্যপ অবস্থায় মহিলারাও যদি রাস্তায় নেমে বেলেল্লাপনা করেন, তবে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, ইদানীং অনেক মহিলা গাড়িচালক মদ্যপ অবস্থায় স্টিয়ারিংয়ে বসে বেপরোয়াভাবে যেমন গাড়ি চালাচ্ছেন, তেমনই ‘চূড়ান্ত অশালীন’ আচরণ করছেন রাজপথে।

[বাবা খুনে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড]

Advertisement

এই বছর ক্রিসমাস ইভ অর্থাৎ বড়দিনের আগের দিনটি পড়েছে রবিবার। সপ্তাহের প্রথম দিন বড়দিনের ছুটি। ফলে উইক এন্ড থেকেই যে কলকাতা বড়দিনের উৎসবে মেতে উঠবে, তাতে আর সন্দেহ নেই। লালবাজারের এক কর্তা জানান, মূলত সেই কারণেই ২২ ডিসেম্বর থেকে পার্ক স্ট্রিটে থাকছে কড়া পুলিশি ব্যবস্থা। ওই দিন থেকেই পার্ক স্ট্রিটে শুরু হয়ে যাচ্ছে বড়দিনের উৎসব। উইক এন্ডে উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে নিউ মার্কেট, বউবাজার থেকে শুরু করে সারা কলকাতায়। যদিও লালবাজারের বেশি ভাবনা পার্ক স্ট্রিটকে নিয়েই। কারণ অভিযোগ রয়েছে, শহরের বেশ কিছু যুবক-যুবতী মনে করেন বড়দিন আর বছরের শেষ মানেই পার্ক স্ট্রিট ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে গিয়ে মদ্যপান করা। তাতেও অসুবিধা নেই পুলিশের। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি অঞ্চলে বিশেষ অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের নজরে এসেছে কয়েকটি ঘটনা।

পার্ক স্ট্রিট ও তার সংলগ্ন বেশ কয়েকটি রাস্তার উপর গার্ডরেল বসিয়ে ব্রেথ অ্যানালাইজারের সাহায্যে মদ্যপ গাড়ির চালকদের পরীক্ষা চালানোর সময়ই দেখা গিয়েছে, বহু চালকের হাত টলোমলো। ব্রেথ অ্যানালাইজারের যন্ত্রের ‘রিডিং’ই বলছে, মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করেছে চালক। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে চালককে। আটক করা হচ্ছে গাড়িগুলিকে। তাই পার্ক স্ট্রিট আর শেক্সপিয়র সরণি থানার সামনে দেখা যাচ্ছে বহু আটক হওয়া বিএমডব্লু, মার্সেডিজ, জাইলো গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে। কারণ, মদ্যপ চালকের হাতে স্টিয়ারিং গেলেই বিপদ। পুলিশকর্তাদের ধারণা, বড়দিনের বহু আগে থেকে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান চলতে থাকলে বড়দিনের সময় তা আরও বাড়তে পারে। আর তার সঙ্গে বাড়তে পারে বেলেল্লাপনাও। এর আগেও বহুবার পুলিশ দেখেছে, রাত বাড়লে বাড়ে মদ্যপদের গোলমাল। বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গিয়েছে, যুবতীরা মদ্যপান করে তাঁদের সঙ্গীদের সঙ্গে গোলমাল করছেন। আবার নাইট ক্লাব থেকে মদ্যপান করে বেরিয়েও রাস্তায় এসে শুরু হয়েছে গোলমাল। কেন তার পুরুষসঙ্গী অন্য এক সুন্দরীর সঙ্গে ডান্স ফ্লোরে নাচানাচি করেছেন, গোলমাল বেধেছে তা নিয়েও। তাই সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশ পার্ক স্ট্রিটে সতর্ক থাকছে। কিন্তু ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাত বাড়লে আরও সতর্ক হতে। কারণ, বেলেল্লাপনাও তখন বাড়বে।

[দুধ বাড়ন্ত, বিধানসভার দখল নিল ‘বামপন্থী’ লাল চা]

মদ্যপান করার পর বহু যুবকের প্রবণতা থাকে ইভটিজিং ও শ্লীলতাহানির। অনেক সময়ই ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও মহিলাকে স্পর্শ করে অনেকে। এই বিষয়টি নিয়েও পার্ক স্ট্রিটে শুরু হয় গোলমাল। এমনকী, শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে মারপিটও হয় পার্ক স্ট্রিট এলাকায়। এবার এই ধরনের বেলেল্লাপনা বন্ধ করতেই বাড়ানো হচ্ছে পুলিশের নজরদারি। গত বছর বড়দিনের সময় বেলেল্লাপনা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল ২২২ জন। এই বছর পুলিশকর্তাদের নির্দেশ, মদ্যপান করে বেসামাল হয়ে গোলমাল করলেই সেই ব্যক্তিকে ধরতে। এমনকী, গোলমাল করলে ছাড় পাবেন না মহিলারাও। কারণ, ছোট গোলমাল কিছুক্ষণের মধ্যে বড় গোলমালে পরিণত হতে পারে, সেই প্রমাণ রয়েছে পুলিশের কাছে।

একই সঙ্গে ইভটিজিং ও শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা আয়ত্তে আনতে পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি থানা তৈরি করেছে মহিলা পুলিশের বিশেষ টিম। সাদা পোশাকে থাকা ওই মহিলাদের দেখে বোঝাই যাবে না যে, তাঁরা পুলিশকর্মী। পার্ক স্ট্রিটে ভিড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াবেন তাঁরা। ভিড়ের মধ্যে রোমিওদের দেখলেই তাঁরা পাকড়াও করবেন। মুহূর্তের মধ্যে সিগন্যাল দেবেন সহকর্মীদের। ইভটিজাররা তাঁদের হাত ছেড়ে পালানোর আগেই ছুটে আসবেন তাঁদের সহকর্মীরা। গ্রেপ্তার করা হবে অভিযুক্তদের। এই বছরও নিরাপত্তার খাতিরে পার্ক স্ট্রিটে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার বানানো হচ্ছে। পুরো পার্ক স্ট্রিটকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে নিয়ে কড়া নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[সম্পত্তির জন্য মায়ের সামনেই বোনকে কুপিয়ে খুন দাদার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement