অর্ণব আইচ ও সঞ্জীব মণ্ডল: কলকাতা তো বটেই, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের একাধিক জায়গায়ও রীতিমতো অস্ত্র দেখিয়ে তোলাবাজির করছেন এক গোয়েন্দা আধিকারিক! অভিযোগ পেয়ে তাঁর কসবার রাজডাঙার বাড়িতে তল্লাশি চালাল পুলিশ। ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র, নগদ সাত লক্ষ টাকা ও কয়েক লক্ষ টাকা গয়না উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, আগ্নেয়াস্ত্রগুলির লাইসেন্স নেই। নগদ টাকা ও গয়নাগুলিও আয় বর্হিভূত বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ওই গোয়েন্দা আধিকারিক এত আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে পেলেন? বাড়িতেই বা লুকিয়ে রেখেছিলেন কেন?
[ধর্মকথা শুনে গাঁজার ছিলিমে টান, ভিনরাজ্যের যুবকের সর্বস্ব লুঠ ‘ঘাট গ্যাং’-এর]
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দার্জিলিং জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পদস্থ কর্তা। ডিআইবি-র ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত তিনি। কলকাতায় তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে এফআইআর করেছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগকারীর দাবি, টাকা আদায় করার জন্য অস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে ভয় দেখাচ্ছিলেন ওই গোয়েন্দা আধিকারিকরা। তদন্তে নেমে পুলিশের শীর্ষকতারা জানতে পারেন, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের একাধিক জায়গায়ও তোলাবাজিতে অভিযুক্ত দার্জিলিং জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এই ইনস্পেক্টর। সোমবার রাতে তাঁর কসবার রাজডাঙা এলাকায় বাড়িতে হানা দেন পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চলে তল্লাশি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাড়ির একটি গোপন জায়গা থেকে ১১টি আগেয়াস্ত্র, নগদ সাত লক্ষ টাকা ও কয়েক লক্ষ টাকার গয়না পাওয়া গিয়েছে। কর্মসূত্রে উত্তরবঙ্গে থাকতে হয়। তবে মাঝমধ্যে কসবার বাড়িতে আসেন ওই গোয়েন্দা আধিকারিক। তবে সোমরাতে যখন ওই বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ, তখন অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না তিনি। পুলিশের দাবি, প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র, টাকা ও গয়না লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। পরিবারের লোকের কাছে উদ্ধার হওয়া আগেয়াস্ত্রের লাইন্সেস দেখতে চেয়েছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু, তাঁরা তা দেখতে পারেননি বলে অভিযোগ। আপাতত বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিশাল গর্গ জানিয়েছেন, ওই গোয়েন্দা কর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করবে দুর্নীতিদমন শাখা। উদ্ধার হওয়া সামগ্রী দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকদের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত গোয়েন্দাকর্তার আরও একটি বাড়ি আছে জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে। সেখানে তল্লাশি হতে পারে।
এদিকে জেলার এক পদস্থ গোয়েন্দা কর্তার যে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ, তা স্বীকার করে নিয়েছেন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী। তিনি জানিয়েছেন, ‘ওই ইনস্পেক্টর ট্রেনিংয়ে রয়েছেন বলে জানি। শুনেছি তাঁর বাড়িতে অভিযান হয়েছে।” ট্রেনিংয়ের পর ওই অফিসারকে জেরা করা হতে পারে।
[বন্ধ হয়ে গেল এলিট, মাল্টিপ্লেক্সের দাপটে ফের এক ‘সিনেমাওয়ালা’র অকালমৃত্যু]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.