Advertisement
Advertisement
Lal Bazar

রাতের কলকাতায় রহস্যময় অটোয় মাদক পাচার! লালবাজারের জালে ‘ড্রাগ ক্যুইন’ শাহিদা

যে রাস্তায় আলো কম, সেখানেই এসে দাঁড়ায় এই রহস্যজনক অটো।

Kolkata police nabs drug Queen Shahida | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:March 8, 2022 11:58 am
  • Updated:March 8, 2022 5:25 pm  

অর্ণব আইচ: রাতের কলকাতায় সন্দেহজনক অটো। গভীর রাতে সেই অটো কখনও আসে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে, আবার কখনও প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডে। যে রাস্তায় আলো কম, সেখানেই এসে দাঁড়ায় এই রহস্যজনক অটো। কোনও ছায়ামূর্তি এসে সেই অটো থেকে কিছু একটা নিয়ে মিলিয়ে যায় আবছা অন্ধকারে।

দক্ষিণ কলকাতার গল্ফগ্রিন অঞ্চলের মাদারতলা-সহ কয়েকটি অঞ্চলে বাইরের লোকেদের আনাগোনা বেড়ে চলেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই যে রীতিমতো ধোপদুরস্ত পোশাক পরা ছাত্র বা তরুণ, তা বুঝতে দেরি হয়নি লালবাজারের (Lal Bazar) গোয়েন্দাদের। আর সেই সূত্র ধরেই তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ল দক্ষিণ কলকাতার ‘ড্রাগ কুইন’ শাহিদা বিবি। তার কাছ থেকে দু’টি প্যাকেটে উদ্ধার হয়েছে ২৫৯ গ্রাম মাদক।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নারীদিবসে মহিলাদের কুর্নিশ মোদির, কবিতায় শুভেচ্ছা মমতার]

পুলিশ জানিয়েছে, যাদবপুর, গল্ফগ্রিন, টালিগঞ্জ থেকে শুরু করে লেক বা রবীন্দ্র সরোবর- দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে মাদক পাচার ও বিক্রি শুরু করে শাহিদা বিবি। প্রথমে গাঁজা দিয়ে শুরু। ক্রমে চরস ও হেরোইন বিক্রি করতে শুরু করে সে। ধীরে ধীরে তৈরি করে দল। দক্ষিণ কলকাতার কিছু তরুণকে বেছে তাদের টাকার লোভ দেখিয়ে বিক্রি শুরু করে মাদক। লালবাজারের গোয়েন্দারা তাকে একাধিকবার ধরেন। হেফাজতে নিয়ে তাকে সতর্ক করা হয়। বরং এর পর থেকে সে আড়ালে থেকেই শুরু করে মাদক পাচার।

কিছুদিন ধরে লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসছিল যে, রাতের অন্ধকারে গল্ফগ্রিন এলাকায় আসছে একটি অটো। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড বা প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের বিভিন্ন জায়গায় এসে দাঁড়ায় সেটি। চালক ছাড়াও কখনও পিছনে বসে এক আরোহী। অন্ধকারের মধ্যেই একজন অটোচালক বা আরোহীর কাছ থেকে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। পুলিশের নাকা চেকিং এড়ানোর জন্য বড় রাস্তার বদলে ভিতরের রাস্তা ধরেই পালিয়ে উধাও হয়ে যায় সেই অটো।

এর মধ্যেই গোয়েন্দারা খবর পান যে, দিনের বিভিন্ন সময় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের লাগোয়া কিছু রাস্তা ও অলিগলিতে আনাগোনা বেড়েছে বাইরের যুবকদের। তাদের মধ্যে অনেকেই ছাত্র। ওই ক্রেতাদের মধ্যে একটি অংশ গাঁজা বা চরস কেনে। বাকিরা কেনে ব্রাউন সুগার বা হেরোইনের পুরিয়া। ওই ক্রেতাদের সূত্র থেকেই গোয়েন্দারা কয়েকজন মাদক পাচারকারীর নাম পান। তাদের সূত্র ধরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই মাদক পাচারকারীদের (Drug Smuggling) মাথায় যে রয়েছে, সে শাহিদা বিবিরই পরিবারের লোক। তাকে সামনে রেখে শাহিদাই যে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে মাদক পাচারের চক্র ফেঁদেছে, সেই ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত হয়। এবার ওই রহস্যজনক অটোর সঙ্গে এই মাদক পাচারের যোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা হয়। সেইমতো বিভিন্ন রাস্তার সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা। তাতে যে যুবককে প্যাকেট জাতীয় কিছু নিতে দেখা যায়, সে যে ‘ড্রাগ ক্যুইন’ শাহিদার পরিবারের লোক, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন।

[আরও পড়ুন: ‘যা হয়েছে ঠিক হয়েছে’, বিধানসভায় বিজেপির বিক্ষোভের সমর্থনে দিলীপ, পালটা আক্রমণ কুণালের]

গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, গাঁজা বা হেরোইন পুরিয়া করে বিক্রি করলেও একসঙ্গে অনেকটা মাদক পাচার করেও প্রচুর মুনাফা করতে চাইছে শাহিদা। আর বাইরের কিছু মাদক পাচারকারীও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছে। সেইমতোই গোয়েন্দারা ফাঁদ পাতেন। বাইরের পাচারকারী শাহিদার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে মাদক নিয়ে গল্ফগ্রিন এলাকার জুবিলি পার্কের কাছে আসতে বলে। শাহিদা একটি থলে করে অন্যান্য জিনিসের আড়ালে দু’টি প্যাকেটে ২৫৯ গ্রাম হেরোইন নিয়ে আসে। এর আন্তর্জাতিক মূল্য অন্তত ১০ লাখ টাকা। তাই এত টাকার জিনিস সে নিজেই পাচার করার জন্য আসে। পুলিশের হাতে মাদক-সহ ধরা পড়ে শাহিদা। যদিও তার ক্রেতাদের সন্ধান মেলেনি। যে অটো করে এই ‘ড্রাগ কুইন’কে মাদক সরবরাহ করা হত, সিসিটিভির ফুটেজে নম্বর অথবা বিশেষত্ব দেখে সেটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। শাহিদাকে জেরা করে মাদক চক্রের অন্যদেরও ধরার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement