অর্ণব আইচ: বাড়ির মধ্যেই মাদক তৈরি। ‘আটা’ আর ‘তেল’ মিশিয়ে তৈরি হেরোইন। মুর্শিদাবাদের গ্রামে সেই হেরোইন তৈরির পর কলকাতা হয়ে তা পাচার হত দেশের বড় শহরগুলিতে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চিৎপুর থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাদক ধরল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গ্রেপ্তার হল মাদক পাচারকারী আদুত শেখ ওরফে তুয়েল মিস্ত্রি। এদিকে, ময়দান এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড বুলেট। আনিস আলি ওরফে আফসর আলি ও রাজেশ মল্লিক নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রাজেশ মল্লিক ২০০৯ সালে ডাকাতি ও খুনের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। জেল থেকে বেরিয়ে ফের অস্ত্র জোগাড় করে।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ মুর্শিদাবাদ থেকে ট্রেনে করে কলকাতা স্টেশনে এসে পৌঁছয় আদুত শেখ। এসটিএফ আধিকারিকদের কাছে খবর ছিল, কলকাতা হয়ে রাতেই মাদক পাচার হবে বাইরে। সেইমতো চিৎপুর স্টেশনের বাইরে ফাঁদ পাতেন গোয়েন্দারা। আদুত স্টেশনের বাইরে আসতেই সে ধরা পড়ে গোয়েন্দাদের জালে। তার কাছ থেকে দু’টি প্যাকেটে উদ্ধার হয় ৭০০ গ্রাম হেরোইন মাদক। তার দাম প্রায় ৪০ লাখ টাকা। জেরার মুখে সে স্বীকার করে, সে মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানা এলাকার ভুরকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা। তার নিজের বাড়িতেই হেরোইন তৈরি হয়। বীরভূম, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা আফিমের গুঁড়ো কেনে। সাদা রঙের ওই গুঁড়োকে তারা ‘আটা’ বলে। একইসঙ্গে চোরাপথে জোগাড় করে রাসায়নিক অ্যাসেটিক অ্যানহাইড্রাইড। তার কোড নাম ‘তেল’। সেই ‘আটা’ ও ‘তেল’-এর বিক্রিয়া ঘটিয়েই তৈরি হয় হেরোইন। ওই হেরোইনের গুঁড়ো তৈরি করে বাড়িতেই প্যাকেটবন্দি করা হয়। এর মধে্যই তারা যোগাযোগ করে কলকাতা, মুম্বই, হায়দরাবাদ-সহ বিভিন্ন বড় শহরের মাদক এজেন্টদের সঙ্গে। এজেন্টদের কাছে আদুত শেখ নিজেকে তুয়েল মিস্ত্রি বলে পরিচয় দেয়। ট্রেনে করে এই মাদক নিয়ে গিয়ে অন্য শহরে পাচার করে আদুত ও অন্য পাচারকারীরা। এই মাদক চক্রের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.