অর্ণব আইচ: গভীর রাতে নিঝুম হয়ে যাওয়া শহরের সিসিটিভির মনিটরে হঠাৎ যেন কীসের নড়াচড়া। আর তাতেই সতর্ক হবে সিসিটিভি সিস্টেমে সংযুক্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘এআই’। মুহূর্তে পুলিশের কন্ট্রোল রুমকে সতর্ক করবে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ই। প্রাথমিকভাবে এরকম ৩০০টি নতুন অত্যাধুনিক সিসিটিভি রাস্তায় বসাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। ক্রমে রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন জেলা ও কমিশনারেটও বসাবে এই ধরনের অত্যাধুনিক সিসিটিভি। শুধু মানুষের নড়াচড়াই নয়, কেউ ক্যামেরা নষ্ট করলে বা তার ছবি তোলায় বাধা দিতে গেলে নিজেই ‘প্রতিবাদ’ করে উঠবে সিসিটিভি। অর্থাৎ সঙ্গে সঙ্গেই সিসিটিভির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তা জানিয়ে দেবে লালবাজার অথবা অন্য কমিশনারেট বা জেলার কন্ট্রোল রুমকে।
নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ও অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য সিসিটিভি এখন অপরিহার্য। কলকাতায় ট্র্যাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন থানা ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে। এখন পুলিশ আধুনিক বুলেট ক্যামেরা বসানোর উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সিসিটিভির ক্যামেরায় লাগছে আরও আধুনিকতার ছোঁয়া। কলকাতায় এই তিনশোটি সিসিটিভি ক্যামেরা কোন কোন রাস্তায় বসানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এই নতুন সিসিটিভিতে থাকছে ‘মোশন ডিটেক্টর’ পদ্ধতি। সাধারণভাবে দিনের বেলায় যত সংখ্যক মানুষ বা গাড়ির যাতায়াত ওই ক্যামেরায় ধরা পড়ে, তা নিয়ে কোনও সতর্কতা দেবে না ক্যামেরার এআই। কিন্তু দিনে অস্বাভাবিক সংখ্যক ব্যক্তির উপস্থিতি দেখলে অ্যালার্ম বেজে উঠবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। এছাড়াও রাতে এই ক্যামেরার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাতে ফাঁকা রাস্তায় যদি বেশি মানুষের যাতায়াত চোখে পড়ে, তখনও পুলিশকে সতর্ক করবে এই ক্যামেরা।
যে ক্যামেরাটি সতর্ক করছে, পুলিশ আধিকারিকরা তার মনিটরের দিকে নজর রাখবেন। যদি মনিটরে অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়ে, তখনই ওই সিসিটিভি যেখানে বসানো থাকছে, সেই থানাকে সতর্ক করবে লালবাজার। এ ছাড়াও রাস্তায় টহলরত পুলিশের গাড়িকেও সতর্ক করে ওই জায়গায় পৌঁছতে বলা হবে। পুলিশকর্তাদের মতে, নারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই ধরনের সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, অনেক ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীদের সিসিটিভি খারাপ করে দেওয়ার প্রবণতা থাকে। কিন্তু এরপর কেউ যদি ক্যামেরার লেন্স কোনও কিছু দিয়ে বন্ধ করতে চায় বা লেন্সের উপর কালো রং করে তার ‘দৃষ্টি’ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তখনও সঙ্গে সঙ্গেই ক্যামেরার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সতর্ক করবে পুলিশকে। আবার একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার আইপি অ্যাড্রেস কোনওভাবে এক হয়ে গেলেও ‘এআই’ বাধা দেবে ও সতর্ক করবে। আবার যদি কোনও কারণে নেটওয়ার্কের সমস্যা হয়, তখন কন্ট্রোল রুম সরাসরি ফুটেজ না দেখতে পেলেও সিসিটিভির রেকর্ডার পুরো ফুটেজই রেকর্ড করে রাখবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.