Advertisement
Advertisement
কলকাতা পুলিশ

লকডাউনে সঞ্চিত খাবার শেষ, অভুক্ত বৃদ্ধার বাড়িতে রসদ পৌঁছে দিল কলকাতা পুলিশ

ফুটপাতে থাকা সম্বলহীন বৃদ্ধের জন্য খাবার-ওষুধ জোগাড়। জানুন হেল্পলাইনের নম্বর।

Kolkata Police donates twelve days ration to old woman
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:March 28, 2020 9:32 am
  • Updated:March 28, 2020 9:35 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে এখন ‘লকডাউন’। শুনশান কলকাতার রাজপথ। জরুরি পরিষেবার ছাড়া রাস্তায় দেখা নেই কোনও গাড়ির। ঠিক আমি, আপনি বা আমরা, অনেকেই কিন্তু এসময়ে নিজেদের খাদ্যসংস্থানের কথা ভাবছি যে, বাড়ির চাল-ডাল ফুরলে হঠাৎ কোথায় কী পাব! যদিও অত্যাবশকীয় দ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু এই লকডাউন পরিস্থিতিতে বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহস খুব কেউ একটা করছেন না! রেস্তরাঁ কিংবা ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলোও বন্ধ। অতঃপর মজুত রসদ ফুরোলে আর গতি নেই। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই বয়স্ক মানুষের প্রয়োজনে এগিয়ে এল কলকাতা পুলিশ।

বৃদ্ধার বাড়িতে সঞ্চিত খাদ্যবস্তু সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। লকডাউনের মাঝে খানিক বিপদেই পড়েছিলেন গোপী বোস লেনের বাসিন্দা ভগবতী দে। বয়স ৭২। স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। একাই থাকেন বাড়িতে। লকডাউনের আগে খুব বেশি রেশন ও খাবার সংগ্রহ করে রাখতে পারেননি ভগবতীদেবী। তাছাড়া বার্ধক্যজনিত কারণে শরীর ভালো না থাকায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজার করার মতো অবস্থাও নেই তাঁর। তাই সঞ্চয় করা রেশন ও খাবার ফুরিয়ে যাওয়ায় কিছুটা বাধ্য হয়েই বৌবাজার থানায় যোগাযোগ করেছিলেন ভগবতী দেবী।

Advertisement

খবর পেয়েই সার্জেন্ট সৌরভ দাসের নেতৃত্বে ভগবতী দেবীর বাড়িতে পৌঁছে যায় বৌবাজার থানার বিশেষ টিম। ভগবতী দেবীকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি অভুক্ত হয়ে আছেন। দ্রুত তাঁকে নিয়ে আসা হয় বৌবাজার থানায়। সেখানেই তাঁর খাবারের ব্যবস্থা হয়। তারপর ভগবতী দেবীকে ফের পৌঁছে দিয়ে আসা হয় গোপী বোস লেনের বাড়িতে। এরপর ১২ দিনের মতো চাল, ডাল, তেল, মশলা, আলু-সবজি কিনে নিজে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন সার্জেন্ট সৌরভ দাস। প্রসঙ্গত, ভগবতী দেবী কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’ প্রকল্পেরও অন্যতম সদস্য।

করোনা প্রতিরোধে সবাইকে সুরক্ষিত রাখতেই সরকারের তরফে ঘোষিত হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। এই অবস্থায় কলকাতার সমস্ত বয়স্ক নাগরিকদের যে কোনও প্রয়োজনে, বিপদে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের সিনিয়র সিটিজেন হেল্পলাইনের নম্বর: . সন্তান-সন্ততিরা বাইরে থাকলে বয়স্ক মা-বাবাদের প্রয়োজনে কিংবা একলা থাকা প্রৌঢ়-প্রৌঢ়াদের প্রয়োজনে অনায়াসে যোগযোগ করতে পারেন এই নম্বরে। কলকাতা পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন কলকাতাবাসীরা।

টানা ২১ দিনের ‘লকডাউন’ জারি হয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু মানবিকতা, সহমর্মিতাবোধ, ভালবাসা, বন্ধুত্ব এই সব মানবিকদিকগুলির উপর লকডাউন জারি করা হয়নি। তাই শহরের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে একদিকে এই কলকাতা পুলিশ যেমন কড়া মনোভাব পোষণ করছেন তেমনই অসহায় ও সম্বলহীনদের জন্যও এগিয়ে আসছেন তারাই। এই লকডাউন পরিস্থিতিতেও যে ভালবাসা, সম্পর্ক, জ্ঞান, দয়া, আশা, ভক্তি কোনও কিছুর উপরই ‘লকডাউন’ জারি হয়নি, সেটারই প্রমাণই দিল কলকাতা পুলিশ। 

[আরও পড়ুন: পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা, ৩০ লক্ষ পরিবারের দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করছে বঙ্গ বিজেপি]

ভগবতী দেবীর মতো আরেক ভবঘুরে ভদ্রলোককেও সাহায্য করলেন তাঁরা। যার কিনা রাস্তাতে ঘুরেই কোনরকমে দিন গুজরান হয়। শীর্ণ চেহারা। লকডাউনে প্রয়োজনীয় খাবার জোগাড় করার মতো ছোটাছুটি করতে পারেননি। না খেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অভুক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন গড়িয়াহাট ফ্লাইওভারের কাছে। দেখতে পেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার-ওষুধের ব্যবস্থা করলেন সাউথ ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসার-কর্মীরা। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও যেভাবে তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ ওঁদেরও প্রাপ্য। বলছেন শহরবাসীরা। যাঁরা কখনও অন্তঃসত্ত্বা, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পৌঁছে দিচ্ছেন হাসপাতালে, তো আবার শহরের ভবঘুরে ফুটপাতবাসীদের মুখেও খাবার তুলে দিচ্ছেন।

[আরও পড়ুন: দুস্থদের সেবায় ফের পথে মমতা, খাদ্যসামগ্রী বিলি করলেন মুখ্যমন্ত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement