অর্ণব আইচ: করোনা পরিস্থিতিতে একটি নামী সিমেন্ট সংস্থার ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে ৬৪ লক্ষ টাকার সাইবার জালিয়াতি। বিহারের গয়া জেলার জঙ্গল লাগোয়া মাওবাদী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত গ্রামে হানা দিয়ে সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম চন্দন কুমার। ২০২০ সাল থেকে শুরু হয় এই জালিয়াতি। করোনা পরিস্থিতিতে নির্মাণের কাজের জন্য সিমেন্ট পাওয়া শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই সুযোগই নেয় কলকাতা থেকে বিহারে ছড়িয়ে পড়া এই চক্রটি। একটি নামী সিমেন্ট সংস্থার ভুয়ো ওয়েবসাইট বানানো হয়। ওয়েবসাইটটি আসল মনে করে যাঁরা যোগাযোগ করতেন, তাঁদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলত সাইবার জালিয়াতরা। আগাম টাকা দিলে সিমেন্টের বস্তা পাঠানো হবে বলে তারা জানায়। সেইমতো কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর দেওয়া হয়। সেই অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
২০২১ সালে লালবাজারের সাইবার থানায় ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর, বেহালা ও বিধাননগর কমিশনারেটের একটি থানায় এই ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মোট চারটি অভিযোগ পুলিশের কাছে আসে। তাতেই দেখা যায় যে, ৬৪ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত করতে শুরু করেন। যে অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, তার মাধ্যমেই শুরু হয় তদন্ত। কিন্তু ওই ব্যক্তির কেওয়াইসি জাল। শেষপর্যন্ত তদন্ত করে লালবাজারের সাইবার থানার আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, বিহারের গয়া জেলার ওয়াজিরগঞ্জ থানা এলাকার কুরকিহার এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে চন্দন কুমার নামে ওই ব্যক্তি। কিন্তু মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে ধরা বিশেষ সহজ ছিল না।
গভীর রাতে ওই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে হানা দেন গোয়েন্দারা। অভিযুক্তর বাড়ি ঘিরে ধরে তল্লাশি চালিয়ে তাকে ধরে ফেলা হয়। সোমবার ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ জেনেছে, ওই চক্রের মাথায় রয়েছে কলকাতার এক বাসিন্দা। এবার ওই সাইবার অপরাধীর সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.