সুব্রত বিশ্বাস: ‘স্মৃতি সততই সুখের’ হলেও মেট্রো বিভ্রাটের স্মৃতি কিন্তু প্রতিটি যাত্রীর কাছেই দুঃস্বপ্নের। আর সেই বিভ্রাট যদি পুজোর মধ্য ঘটে, তবে? যদিও এমনকিছু ঘটলে তা উপযুক্তভাবে মোকাবিলার জন্য মেট্রোর ভাঁড়ারে প্রদীপের দৈত্য নেই। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই আশঙ্কার কথা শোনালেন মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি সি শর্মা। তিনি বলেন, ‘পুজোতে কোনও ঘটন ঘটলে আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিশেষ টিম থাকবে। এছাড়া প্রতিটা স্টেশনেই রয়েছেন রক্ষণাবেক্ষণের কর্মী। প্রয়োজনে মোবাইল ও সিওজি ব্যবহার করে কর্মীদের তড়িঘড়ি ডেকে এনে কাজ শুরু করা হবে।’ সোমবার মেট্রো গোলযোগে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, গভীর রাত পর্যন্ত যানজটে পড়ে নাজেহাল হয়েছিলেন যাত্রীরা। তেমন ভয়াবহ পরিস্থিতি পুজোর দিনে হলে দর্শনার্থীদের যে কী করুণ দশা হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ, মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর বাড়তি ৪০ শতাংশ চাপ মেট্রোর উপরে পড়েছে। তার উপর পুজোর দিন বলে কথা।
তবে পুজোর বাড়তি ভিড়ের চাপে অসুস্থ হলে মেট্রোতে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকছে। মেট্রোর চিফ মেডিক্যাল অফিসার মিহির চৌধুরি জানান, মেট্রোর গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্টেশনে মেডিক্যাল টিম, চিকিৎসার সব সরঞ্জাম, অক্সিজেন, ওষুধ মজুত থাকবে। পুজোতেই মেট্রো স্টেশনে শৌচালয় পেতে চলেছেন যাত্রীরা। তবে এবারই প্রথম চতুর্থী থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত সকাল আটটা থেকে রাত ১১.১০ পর্যন্ত চলবে মেট্রো। চতুর্থীতে ২৮৪টি ট্রেন চলবে। পঞ্চমী ও ষষ্ঠীতে যথাক্রমে ২৫০ ও ৩০০টি ট্রেন চলবে। সপ্তমী থেকে দশমী দুপুর ১.৪০ মিনিট থেকে মেট্রো চলাচল শুরু হবে। চলবে (দশমী বাদে) পরের দিন ভোর চারটে পর্যন্ত। দশমীর দিন অবশ্য রাত দশটা পর্যন্ত চলবে মেট্রো। ব্যস্ত সময়ের নিরিখে প্রতি পাঁচ থেকে পনেরো মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো।
ভিড়ে যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সে জন্য প্রতি শিফটে অফিসার-সহ ২৫০জন নিরাপত্তারক্ষী থাকবে। ৫৬০টি সিসি ক্যামেরায় বিশেষ নজরদারি টিম থাকবে। স্ক্যানার থেকে মেটাল ডিটেক্টর সক্রিয় রাখা হবে। কালীঘাটে ভিড়ের চাপে গেট ভেঙে বিপত্তির বিষয়টি মাথায় রেখে এবার সেখানে ১১টি গেটই খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো। চিফ অপারেশন ম্যানেজার সাত্যকী নাথ জানান, একটি গেট খারাপ হয়ে রয়েছে। পুজোর আগেই সেটির মেরামতির কাজ শেষ হবে। কালীঘাটে ১২টি টিকিটের মেশিনের একটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। সেটিও মেরামত করা হবে। মেট্রোয় মোট ১৭৯ টিকিটের মেশিনই সক্রিয় থাকবে। অতিরিক্ত ভিড়ে সমস্যা হলেই কার্ড টিকিটের ব্যবস্থাও থাকবে বলে সাত্যকীবাবু জানান। তবে পুজোয় নতুন রেকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন জিএম শর্মা। ডিসেম্বর নাগাদ ডালিয়ান দু’টি রেক আসার সম্ভবনা রয়েছে। তবে পুরনো রেকে যাতে বিভ্রাট না ঘটে সেজন্য তা আগে থেকেই উপযুক্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.