কৃষ্ণকুমার দাস: নির্মীয়মাণ মাঝেরহাট ব্রিজের (Majherhat Bridge) মূল অংশের ২২৭ মিটারের সামান্য কিছুটা কাজ এখন আর বাকি। আগামী সপ্তাহে শুরু হবে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ধাঁচে কেবল জোড়ার কাজ। ভারপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়াররা সোমবার জানালেন, “নদীর উপর ঝুলন্ত বকখালির সেতুর দু’পাশে কেবল জুড়তে সময় লেগেছিল ৪২ দিন। কিন্তু রেল লাইন ও মাটির সার্পোট থাকা মাঝেরহাটের জন্য কেবল জুড়তে ৩০ দিনের কম সময় লাগবে। চেষ্টা হচ্ছে পুজোর আগেই কেবলের কাজ শেষ করার।” পূর্তদপ্তর দিনে-রাতে নজরদারি চালিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। রঙের কাজও শুরু হয়েছে। তিনটি ডিজাইন তৈরি, নবান্নের পছন্দ হলে পুজোর তিনদিন আগে কাজ শেষ করবেন রঙের ইঞ্জিনিয়াররা। নবান্নের টার্গেট রয়েছে, উৎসবের মরশুমেই মাঝেরহাটে ‘কেবল স্টেইড’ ব্রিজ তিলোত্তমার বুকে নতুন আঙ্গিকে চালু করার।
এ বছর শারদোৎসবে দুর্গাষষ্ঠী ২২ অক্টোবর। নিম্মচাপের বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তদারকিতে থাকা পূর্ত দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা এদিন জানিয়েছেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন নির্মাণের টেকনিক্যাল সমস্ত শর্ত ও যাবতীয় সুরক্ষা বিধি মেনেই মাঝেরহাট ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ করা হোক। এখন একটা নীল রঙের ডামি কেবল বসানো হয়েছে। এদিন দুপুরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বৃষ্টির মধ্যেও ব্রিজের পাশে কেবল জোড়ার জন্য ‘সেটআপ’ বসানোর কাজ শুরু করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু পুরোপুরি আসল কেবলের তার জুড়ে দেওয়ার কাজ শুরু হবে আগামী সপ্তাহেই। মূল অংশের ঢালাইয়ে প্রতিদিন জল দেওয়া হচ্ছে এবং নিচের নানা কাজ চলছে। ৬৩৬ মিটার দৈর্ঘ্যের নয়া ব্রিজটি ১৮ মিটার চওড়া এবং চার লেনের হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চলাচল করবে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে ব্রিজের দু’দিকে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির কাজ। মাঝে মধ্যে এসে নির্মাণ কাজের গতি নিয়ে তদারকি করে যাচ্ছেন স্বয়ং পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আর পূর্তদপ্তরের রাস্তা বিভাগের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত শিবির করে বসে আছেন। মাঝে একবার পূর্ব রেলের আপত্তিতে নির্মাণের কাজ থমকে গিয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত গোপনে দফায়-দফায় রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই জটিলতা কাটিয়ে ফের কাজ শুরু করান পূর্তমন্ত্রী। এখন শেষ পর্যায়ের কেবল জুড়লে এবং ভার বহনের টেকনিক্যাল রিপোর্ট পেলেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ব্রিজ তৈরির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর যানবাহন ভরতি যাত্রীদের নিয়ে ভেঙে পড়ে দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংযোগকারী অর্ধশতাব্দীর পুরনো মাঝেরহাট ব্রিজ। এদিনই উত্তর কলকাতার দু’টি পুরোনো সেতু বেলঘরিয়া এবং বেলগাছিয়া সংস্কারের জন্য নতুন টেন্ডার করেছে পূর্ত দপ্তর। বেলঘরিয়া সেতুর জন্য ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬৯ টাকা এবং বেলগাছিয়া সেতুর জন্য ৫ লাখ ১৪ হাজার ৫৭৮ টাকা খরচ ধার্য হয়েছে। বেলঘরিয়ার জন্য দু’বছর ও বেলগাছিয়া সেতুর ক্ষেত্রে দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে বলে পূর্ত দপ্তরের ঘোষণা।
ছবি: পিন্টু প্রধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.