সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবারের সকাল, স্কুল-কলেজ ছুটি থাকলেও বাবা-মায়ের হাত ধরে রাস্তায় ভিড় করতে দেখা যায় কচিকাঁচাদের। রাস্তাঘাট তো কোন ছাড়, পাড়ার মোড়ে ক্রিকেট-ফুটবল খেলতে দেখা যায় এই দিনগুলোতে। কিন্তু কোথায় কী? শুনশান রাস্তা। জাদুঘরের সামনের গেটে বড় তালা। সঙ্গে নোটিস বোর্ডে লেখা, ‘করোনা সংক্রমণের জেরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম।’ সতর্কতা জারি করা হল আলিপুর চিড়িয়াখানাতেও। কলকাতার একাধিক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও সতর্কতা জারি করে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিশ্বব্যাপী মহামারির আকার ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। তার প্রকোপ থেকে বাদ পড়েনি কলকাতাও। এখনও পর্যন্ত কলকাতায় কেউ করোনায় আক্রান্ত না হলেও সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় তার জেরে আগাম সতর্কীকরণের ব্যবস্থা জারি করেছে রাজ্য সরকার। তবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে রাজ্যে দোসর রূপে দেখা দিয়েছে সোয়াইন ফ্লু। এর হাত থেকে পশুদের বাঁচাতে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় বনদপ্তর। সেন্ট্রাল জু অথরিটির ফরমানে রাজ্যের সমস্ত চিড়িয়াখানায় মাংসাষী প্রাণীদের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে চিকেন। পরিবর্তে তাদের খেতে দেওয়া হবে বিফ ও মাটন। তবে পশুদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় বনদপ্তর। তাই কাঁচা মাংসের পরিবর্তে তাদের খেতে দেওয়া হবে ১০০ ডিগ্রি তামপাত্রায় বেশ কিছুক্ষণ ফুটিয়ে সুসেদ্ধ করা মাংস।
রাজ্যের আলিপুর চিড়িয়াখানা, বেঙ্গল সাফারি পার্ক, ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানা, দার্জিলিং-এর জুওলজিক্যাল পার্ক সর্বত্রই একই ব্যবস্থা নেওয়ার নিদান দেয় কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষক দপ্তর। তবে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ১৬ মার্চ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসা হবে, বলে জানান স্টেট জু অথরিটির সদস্য সচিব। তবে সেদ্ধ করা মাংস খেতে দেওয়ার মুখ ভার করেছে চিড়িয়াখানার পশুরা। কেবলমাত্র চিড়িয়াখানা নয়, বেলুড় মঠেও জারি করা হল নির্দেশিকা। ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বেলুড়মঠে বন্ধ করে রাখা হবে প্রসাদ বিতরণ। এমনকি স্থগিত রাখা হল বেলুড়ের নরনারায়ণ সেবা। বেলুড় মঠে মন্দিরের ভিতরেও বসতে দেওয়া যাবে না কাউকে। ফলে সমস্যয় পড়বেন পুণ্যার্থীরা। বেলুড় মঠের পাশাপাশি অন্যান্য মন্দিরগুলিতে জমায়েত এড়াতে সতর্কতা জারির পথে প্রশাসন।
অন্যদিকে, রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফ থেকে। সপ্তাহের শেষ হলেও প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় দেখা মিলছে না কারওরই। করোনার আতঙ্ক থাবা বসিয়েছে কল্লোলিনীর নিত্যদিনে। ফলে গরমের ছুটির আগেই করোনা সংমক্রণের ছুটিতে বাড়ির বড়রা আতঙ্কিত হলেও মজাই পেয়েছে বাড়ির খুদে সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.