নব্যেন্দু হাজরা: স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার দিন শেষ। বাড়িতে বসেই স্মার্টফোনে কেটে নেওয়া যাবে মেট্রোর টিকিট। টিকিট কাটলে পাওয়া যাবে কিউআর কোড। যে কোড ব্যবহার করেই পার করা যাবে মেট্রোর গেট।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় আসতে চলেছে নয়া এই ব্যবস্থা। যেমনটা সম্প্রতি চালু হয়েছে দিল্লি মেট্রোয়। তেমনই এবার চালু হতে চলেছে কলকাতার পূর্ব-পশ্চিমেও। ফলে যাত্রীদের স্মার্টকার্ড ভেঙে যাওয়া বা টোকেন হারিয়ে যাওয়ার বদাভ্যাসে ইতি পড়তে চলেছে নয়া ব্যবস্থায়। মেট্রোসূত্রে খবর, আগামী বছরের মাঝামাঝি চালু হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত পরিষেবা। নয়া পরিষেবার গোড়া থেকেই এই কিউআর কোড ব্যবহার করে গেট পার হতে পারবেন যাত্রীরা। ইতিমধ্যেই এই পাঁচ স্টেশনে বসছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর। সেই সঙ্গে কাউন্টারে ভিড় এড়াতে চালু হচ্ছে এই কিউআর কোডে মেট্রোর এন্ট্রি-এক্সিট পরিষেবা। মেট্রোসূত্রে খবর, বর্তমান মেট্রোয় সর্বনিম্ন ভাড়া পাঁচ টাকা হলেও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় তা ১০ টাকা হওয়ার সম্ভাবনা। তারপর প্রতি স্টেজে পাঁচ টাকা করে বাড়বে। খুচরো টিকিটের জন্য থাকবে টোকেন ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে মান্থলির জন্য স্মার্টকার্ডও। পাশপাশি টিকিটিং ব্যবস্থাকে ক্যাশলেস করার জন্যই চালু হতে চলেছে কিউআর কোড ব্যবস্থা।
[‘শারীরিক চাহিদা মেটাতে চাই’, এসকর্ট সার্ভিস সাইটে গৃহবধূর নামে পোস্ট]
কীভাবে হবে এই কোডের ব্যবহার? সূত্রের খবর, মেট্রোর ঠিক করে দেওয়া নয়া অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হবে যাত্রীকে। যে কোনওরকম অ্যান্ড্রয়েড ফোনেই তা করা যাবে। তারপর ওই যাত্রীকে সেখানে কোথা থেকে তিনি কোথায় যেতে চান তা লিখতে হবে। অ্যাপ তখন কত টাকা ভাড়া তা দেখিয়ে দেবে স্ক্রিনে। যাত্রীকে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সেই ভাড়া দিয়ে দিতে হবে। অ্যাপ সেই রিসিভিং মেসেজ পাঠাবে যাত্রীকে। তাতে লেখা থাকবে কিউআর কোড। যাত্রীরা সেই কোড মেট্রোর এএফসি গেটে গিয়ে ধরলেই দরজা খুলে যাবে। যাত্রীরা স্টেশনে প্রবেশ করবেন। আবার বের হওয়ার সময় একই পদ্ধতিতে কিউআর কোড দিলে গেট খুলে যাবে। কিউআর কোড ব্যবহারের জন্য নয়া গেট প্রতি স্টেশনেই বসানো হচ্ছে। যার ফলে যাত্রীকে টিকিট কাটতে স্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। বাড়িতে বসেই তা কেটে নিতে পারবেন। মেট্রোর এক কর্তা জানান, কেউ চাইলে নির্দিষ্ট দূরত্ব লিখে ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে একেবারে মোটা টাকা কাটিয়ে রাখতে পারেন। যেমন কেউ ৫০০ টাকা কাটিয়ে রাখলেন। যে কিউআর কোড তার পরিবর্তে তাঁর অ্যাপে আসবে, তা দিয়েই ৫০০ টাকার যাতায়াত তিনি করতে পারবেন।
[সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ জমিয়ে মাদক পাচার, শ্রীঘরে যুবক]
বর্তমান মেট্রোয় অত্যাধিক যাত্রীচাপে অধিকাংশ এএফসি গেটই খারাপ হয়ে যায়। যাত্রীচাপ বেশি পড়লে গেটের সেন্সর গরম হয়ে যায়। ফলে তা কাজ করতে চায় না। আটকে যায়। তাছাড়া দিনে বহুবার ওই গেটগুলোকে খুলে টোকেন বের করতে হয় কর্মীদের। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় টোকেনে ঘাটতি। বার বার গেট খোলার ফলে মাঝেমধ্যেই বিগড়োয় তা। তৃতীয়ত, ওই গেট খারাপ হলে সেটিকে ঠিক করতে যে সমস্ত যন্ত্রের প্রয়োজন, তাও এখানে পাওয়া যায় না। ফলে ঠিকঠাক সারানোও হয় না। এসব ঝামেলা নয়া ব্যবস্থায় এড়ানো যাবে। কেএমআরসিএলের ডিরেক্টর অনুপ কুমার কুণ্ডু বলেন, “ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রীরা এবার কিউআর কোড ব্যবহার করেই যাতায়াত করতে পারবেন। এর ফলে বাড়িতে বসে মোবাইলে নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমেই এই কোড পেয়ে যাবেন। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে তাঁদের আর হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.