ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: টাইমটেবিল আছে, কিন্তু টাইমের ঠিক নেই! বিশেষত রাতের দিকে কলকাতা মেট্রোর সময় মেনে চলার অভ্যেস পালটে গিয়েছে। আপ-ডাউন দু’দিকেই এক অবস্থা। একের পর এক ট্রেন বাতিল। অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের এত পরে ট্রেন ঢুকছে যে, পরের ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় পরপর দু’টি ট্রেনও বাতিল হচ্ছে। তুমুল বিভ্রান্তিতে খাবি খাচ্ছেন যাত্রীরা। অফিস ফেরত মানুষের বাড়ি ফিরতে সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। কারণ তাঁরা মেট্রো থেকে নেমে কানেকটিং লোকাল ট্রেন পাচ্ছেন না। কেন এমন হচ্ছে, তার কোনও যথাযথ সদুত্তর অবশ্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে মেলেনি। তাঁদের দাবি, অনেক জায়গায় লাইনের কাজের কারণে গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে মেট্রোর। সেই কারণেই হয়তো অনেকক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে মেট্রো আসছে না।
আচমকাই এক একটি মেট্রো ‘বাতিল’ হয়ে যাওয়ার ঘটনা এখন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেট্রো স্টেশনের ট্রেন টাইমিং ইন্ডিকেশন বোর্ডে যে সময় দেখানো হচ্ছে, সেই সময়ে মেট্রো আসছে না, উল্টে তা বাতিল হয়ে একেবারে পরের ট্রেন আসছে। রাতের দিকে এমনিতেই ১০ মিনিট অন্তর মেট্রো, তার উপর একটি ট্রেন না আসা মানে কুড়ি মিনিট ধৈর্য ধরতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর দু’টি মেট্রো বাতিল হলে প্রায় আধ ঘণ্টার ভোগান্তি। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের তিন মিনিট পর্যন্ত দেরিতে মেট্রো এলে তাকে মেট্রোর তরফে ‘লেট’ ঘোষণা করা হয়। আর তার থেকেও বেশি হলে তাকে বাতিল বলা হয়। নিয়মিত কন্ট্রোলরুম থেকে গাড়ি চলাচলের রোস্টার বা লক শিট চিফ অপারেশন ম্যানেজার, তারপর জিএম হয়ে রেলবোর্ডের কাছে পৌঁছয়। লক শিটে অবশ্য কোনও মেট্রো বাতিল দেখানো হয় না। জানানো হয়, নিয়ম মেনে ২৮৮ মেট্রোই চলেছে সপ্তাহের কাজের দিনে।
বৃহস্পতিবার রাতেই চাঁদনি চক স্টেশনে কবি সুভাষগামী মেট্রো ৯টা ২৫ মিনিটের পর এল ৯টা ৪৩ মিনিটে। মাঝে থাকা ৯টা ৩৫-এর মেট্রো আসেনি। উলটোদিকে আপ লাইনেও একই ছবি। সময় মেনে আসেনি ট্রেন। নোয়াপাড়া থেকে মেট্রো ধরে এসে শুক্রবার দুপুরে প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন ইংরাজির শিক্ষিকা মিলি চক্রবর্তী। বলেন, ‘‘দুপুর ৩টে ৫০ মিনিটে স্টেশনে আসি। ট্রেন পাই ৪টে ১৫ নাগাদ। রোজ এক ভোগান্তি। সময়ে মেট্রো আসে না। সেই সঙ্গে তো অধিকাংশ স্টেশনে বেশিরভাগ টিকিট কাউন্টারই বন্ধ। দমদম স্টেশনে তো বিশাল লাইন পড়ে যায় যাত্রীদের। টিকিট কাটতে গিয়েই তিনটে মেট্রো মিস হয়ে যায়।’’
যাত্রীদের বক্তব্য, তাঁরা কেউ দমদমে নেমে লোকাল ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরেন। কেউ বা নিউ গড়িয়াতে নেমে। মেট্রো থেকে নেমেই তাঁরা লোকাল ধরতে ছোটেন। কিন্তু মেট্রো বাতিল হলে লোকাল মিস হয়ে যায় তাঁদের। অফিস টাইমে এই ঝঞ্ঝাট দেখা না গেলেও রাত আটটার পর মাঝেমধ্যেই মেট্রোর খামখেয়ালিপনায় আক্রান্ত হচ্ছে পাতালপথ। এমনকী, দুপুরের দিকেও এক অবস্থা। কর্তৃপক্ষের কথায়, গোটা দিন ধরেই দু’এক মিনিট দেরি হতে হতে রাতের দিকে ট্রেনের সময়ের আর কোনও ঠিক থাকে না। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় মেট্রোর গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে লাইনের কাজের জন্য। সে কারণে হয়তো কোনও কোনও ট্রেন সময় মেনে আসছে না। তবে তা দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.