নব্যেন্দু হাজরা: করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ারই ইঙ্গিত। এমন অবস্থায় খুব বেশি মেট্রো চালাতে রাজি নয় কর্তৃপক্ষ। তাই ব্যস্ত সময়ে ১০ মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো। বাকি সময় ১৫ মিনিট অন্তর। এমনই সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা মেট্রোরেল।
সকাল ৯টা থেকে ১১.৩০ এবং বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত আপ এবং ডাউনলাইনে মেট্রো চলবে ১০ মিনিট পরপর। দিনের বাকি সময় মানে সকাল ৮ টা থেকে ৯টা, সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ৪টে এবং ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ১৫ মিনিট অন্তর মিলবে মেট্রো। এখানেই মেট্রো যাত্রীদের প্রশ্ন, ট্রেন চলাচলের সময়সীমা যেখানে ১৫ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টা করা হল, সেখানে আরও বেশি যাত্রী যাতে যেতে পারেন সে কথা ভেবে দুই ট্রেনের ব্যবধান আরও কমানো হল না কেন? ১১০-এর বদলে আরও কিছু অতিরিক্ত ট্রেন যদি চলত তবে তো ১০-এর বদলে পাঁচ বা সাত মিনিট অন্তর ট্রেন পরিষেবা পাওয়া যেত। তাতে অনেক বেশি সংখ্যক যাত্রী মেট্রোয় বসার সিট পেতেন। এমনিতেই সিট বুকিংয়ের পদ্ধতি এত জটিল যে সাধারণ মানুষ কতটা পেরে উঠবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েইছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই কর্মীসংকট চলছে। তার উপর মাত্র ৪৫০ যাত্রী নিয়ে মেট্রো ছোটালে প্রতি ট্রিপে যে বিশাল অঙ্কের টাকার লোকসান মেট্রোর হবে, তা করতে চাইছে না কর্তৃপক্ষ। এমনিতেই সাধারণ সময় ঠাসা যাত্রী থাকাকালীন ১০০ টাকা আয় করতে মেট্রোর খরচ হয় ২৫০ টাকার বেশি। আর এই পরিস্থিতিতে তো যাত্রীই হবে না মেট্রোয়। ফলে পুরোটাই লোকসান। তাই যতটা কম সম্ভব ট্রেন চালাতে চাইছে কর্তৃপক্ষ। পরে যাত্রী বুঝে ধীরে ধীরে মেট্রোও বাড়বে। কোচে যাত্রীও বাড়বে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর নিটের পরীক্ষার্থীদের জন্য পরিষেবা শুরু হলেও ১৪ তারিখ থেকেই যাত্রী নিয়ে ছুটবে মেট্রো। ই-পাসের মাধ্যমে টিকিট বুক করা যাবে ১২ ঘণ্টা আগে। অর্থাৎ রাত ৮টার পর পরেরদিনের টিকিট কাটা যাবে। একটি নির্দিষ্ট লিংকের মাধ্যমে ই-পাস দেওয়া হবে। ওই লিংকে ক্লিক করে যাত্রীকে নিজের নাম, পরিচয়, যাত্রার সময় এবং কোন স্টেশন থেকে কোন স্টেশনে তিনি যেতে চান, তা জানাতে হবে। এরপর ই-পাস পাঠানো হবে সেই যাত্রীর মোবাইলে। যা আদতে একটি QR কোড। ওই কোডের রং দেখেই মেট্রোর প্রবেশপথে থাকা রক্ষীরা বুঝতে পারবেন, সেই যাত্রীর কাছে মেট্রোযাত্রার বৈধ অনুমতি রয়েছে কি না। কোন সময়ে কী রঙের কিউ আর কোড দেওয়া হবে, তা গোপন রাখা হবে। নির্দিষ্ট ‘স্লট’ শুরু হওয়ার আগে প্রবেশপথের রক্ষীদের শুধু তা জানানো হবে। ১২ ঘণ্টার জন্য ১২টি রং ঠিক করা হচ্ছে। সেই রং ঠিক করার কাজ চলছে এখন।
যাত্রীদের কাছে সিট বুকিংয়ের লিংক পৌঁছে দিতে মেট্রোর নিজস্ব ওয়েবসাইট, অ্যাপ এবং রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের ‘পথদিশা’ অ্যাপটি কাজে লাগানো হবে। আপাতত উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোতেই এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.