ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: বদলে যাচ্ছে শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা। সড়ক ছেড়ে যাত্রীরা যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে আরও বেশি করে পাতালপথকেই বেছে নিচ্ছেন। অন্তত মেট্রোর দেওয়া তথ্য তা-ই বলছে। যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে মেট্রোতেই আস্থা রাখছেন শহরবাসী। গত এক বছরে শহরের লাইফলাইনে যাত্রী বেড়েছে দেড় কোটির বেশি। শতাংশের হিসাবে নয় শতাংশ।
মেট্রো সূত্রে খবর, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মেট্রোয় যাত্রী হয়েছে ১৯.২৫ কোটি। যা আগের অর্থবর্ষে ছিল ১৭.৬৯ কোটি। সবথেকে বেশি যাত্রী মেট্রো(Kolkata Metro) ধরেছেন দমদম স্টেশন থেকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পাতালপথে এই বিপুল যাত্রী বাড়ায় তা কমেছে সড়কপথে। সরকারি-বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি, ক্যাবে যাত্রী কমেছে বিপুল। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন পরিবহণ মালিকরাও।
যাত্রীদের বক্তব্য, এসির হাওয়া খেয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে মেট্রোর (Metro) কোনও বিকল্প নেই। বাসে উঠলে, যেমন সময় অপচয়। তেমনই তা আরামদায়কও নয়। সরকারি বাস সংখ্যায় কম। আর বেসরকারি বাস যাত্রী তুলতে তুলতে চলে সবসময়। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়। দিন পনেরো আগে তিনটি রুট বেড়েছে মেট্রোর। প্রচুর নতুন যাত্রী হচ্ছে সেখানেও। এর পর যখন মেট্রোর রুট আরও বাড়বে, তখন বাসে যাত্রী আরও কমে যাবে।
মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, শুধু কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোরুটেই যাত্রী হয়েছে, ১৭.৯৪ কোটি। দমদম স্টেশন থেকেই মেট্রো ধরেছেন ১.৯৬ কোটি। তারপরে আছে এসপ্ল্যানেড ১.৩২ কোটি। রবীন্দ্রসদন থেকে ১.২৪ কোটি যাত্রী মেট্রো ধরেছেন একবছরে। উত্তর চব্বিশ পরগনার হাজার হাজার মানুষ রোজ লোকাল ট্রেনে চেপে এসে দমদম থেকেই মেট্রো ধরেন গন্তব্যে পৌঁছতে। যে কারণে এই স্টেশনে এত যাত্রীচাপ।
গত একবছরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী হয়েছে ১.২২ কোটি। তার মধ্যে ৪৯.৭৮ লাখ যাত্রী উঠেছেন শিয়ালদহ থেকে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে উঠেছেন ২১.৫৬ লাখ যাত্রী। আর জোকা-তারাতলা রুটে এক বছরে যাত্রী হয়েছে মাত্র ১.৩৪ লাখ। মেট্রো তরফে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রো চালু হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা এক ধাক্কায় আগামী বছরে আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে। হাওড়া-শিয়ালদহ জুড়ে গেলে তো কথাই নেই। লাখ লাখ মানুষ রোজ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ধরে যাতায়াত করবেন।
যাত্রীদের কথায়, এখন সমস্ত মেট্রোর রেকই এসি। ফলে আরামে ঠান্ডা হাওয়া খেয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে মেট্রোর বিকল্প এখন অ্যাপ ক্যাবও নয়। সরকারি-বেসরকারি বাস তো দূর অস্ত। তাছাড়া বেসরকরি বাসে নূন্যতম ভাড়া ১০টাকা। অথচ মেট্রোয় এখনও পাঁচ টাকায় দুই কিলোমিটর পর্যন্ত যাওয়া যায়। সড়কপথে যানজটে আটকে পড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু মেট্রোর ক্ষেত্রে এসব নেই। খুব অল্প সময়েই পৌঁছে যাওয়া যায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। এসব নানা কারণেই যাত্রীরা এখন সড়ক ছেড়ে পাতালমুখী হচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.