নব্যেন্দু হাজরা: একদিনের একটা ঘটনা। তীব্র আতংক ছড়ানো, শোরগোল ফেলা ঘটনা। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার শহরের কর্মীদের ‘আগুন’ মোকাবিলার পাঠ দিচ্ছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। নিজেদের দমকল বিভাগ তো রয়েইছে। কিন্তু এমন গুরুতর পরিস্থিতিতে যাতে দমকল পৌঁছনোর অপেক্ষা না করে স্টেশনে উপস্থিত সব কর্মীই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। স্টেশন মাস্টার থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, বুকিং ক্লার্ক থেকে গেটে দাঁড়ানো কর্মী – প্রত্যেককেই দেওয়া হবে অগ্নিনির্বাপণের প্রশিক্ষণ। কীভাবে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভাতে হয়, কীভাবে গাড়ির কামরা বা স্টেশনে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে হয় – এসবই থাকবে প্রশিক্ষণের আওতায়। পাশাপাশি মেট্রোয় যে দমকলকর্মীরা রয়েছেন, তাঁদেরও আগুন নেভানোর অত্যাধুনিক পদ্ধতি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা মেট্রো কর্তৃপক্ষের। মেট্রোর কামরায় বা টানেলে আগুন লাগলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে তা নেভানো যায়,
ট্রেনের কামরা থেকে সুস্থভাবে যাত্রীদের বের করে আনা হয়, এই যাবতীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে তাঁদের। এখন মোট ৪০ জন দমকলকর্মী রয়েছেন মেট্রোয়। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনকে প্রোমোশন দিয়ে অত্যাধুনিক সরঞ্জামে আগুন নেভানোর কাজে প্রশিক্ষিত করা হবে। নিয়ে আসা হয়েছে অগ্নিনির্বাপণের অত্যাধুনিক যন্ত্রও।
[হৃদপিণ্ডে গঠনগত সমস্যা, ২৫ সপ্তাহে গর্ভপাত চেয়ে আরজি অন্তঃসত্ত্বার]
মেট্রো রেল সূত্রে খবর, ময়দান স্টেশনে রেকে আগুন লাগার পর তা নেভানো এবং যাত্রীদের উদ্ধার করার কাজে দেরি হওয়ায় মেট্রোর দমকল বিভাগের কর্মীদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই মেট্রোর দমকল বিভাগ ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এবং কর্মীদের আরও উন্নত উপায়ে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। ভারতীয় রেলের একমাত্র মেট্রোরই নিজস্ব দমকল বিভাগ রয়েছে। দুটি দমকলের গাড়িও আছে। কিন্তু সেভাবে বড় কোনও পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় না এখানকার কর্মীদের। মাঝেমধ্যে মেট্রোর রেক থেকে ধোঁয়া বেরনো হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা সাধারণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করেই দ্রুত আয়ত্তে আনা যায়। কিন্তু ময়দান স্টেশনে আগুন লাগার ঘটনাই চোখ খুলে দিয়েছে। এরকম বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে, কীভাবে দ্রুত তা সামলানো যায়, সেই পাঠ দেওয়া হচ্ছে স্টেশনে থাকা সব বিভাগের কর্মীকে।
[‘গণচুম্বন’ কাণ্ডে পড়ুয়াদের বহিষ্কারে বিতর্ক, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন শিক্ষামন্ত্রী]
পাশাপাশি প্রতি স্টেশনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে মেট্রো রেল সূত্রে খবর। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনের কামরা এবং স্টেশনে এই যন্ত্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ট্রেনের কামরায় বিপদের সময়ে যাত্রীরা কীভাবে তা ব্যবহার করবেন, তা কামরাতেই লিখিত আকারে দেওয়া থাকবে। মেট্রোর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাবশত যেখানেই আগুন লাগুক, মেট্রোর দমকল বিভাগ যদি শক্তিশালী হয়, সেক্ষেত্রে দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সহজ হবে। সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত হবে। পাতাল রেলের দমকল বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, “স্টেশনে সব কর্মীর যদি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ন্যূনতম প্রশিক্ষণ থাকে, সেক্ষেত্রে আপৎকলীন অবস্থায় তাঁরা নিজেরাই কাজ করতে পারবেন। দমকল কর্মীদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতেও তো একটু সময় লাগে। তার আগে কর্মীরাই প্রাথমিক আতংক কাটিয়ে ফেলতে সক্ষম হবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.