নব্যেন্দু হাজরা: ছিঁড়ল তার, ভাঙল আলো, উড়ে গেল পাখা। ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ল কাচ। স্টেশন ছেড়ে উড়ে কয়েক মিটার দূরে চলে গেল প্ল্যাটফর্মের শেড। লাইনে পড়ে রইল বিশালাকার গাছও। আমফানের দাপটে কার্যত বেসামাল পাতাল পথ। বিশেষত এলিভেটেড স্টেশনগুলো যেন ধ্বংসস্তূপ। ভেঙে চৌচির টিকিট কাউন্টারও। ডিসপ্লে বোর্ড থেকে বসার চেয়ার কিছুই আর আস্ত নেই। সদ্য পথচলা শুরু করা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর দশাও একইরকম। ভাঙল মেট্রোর স্ক্রিন ডোর। নেহাত লকডাউনের কারণে পরিষেবা বন্ধ না হলে ঝড়ের পরদিন ট্রেন চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হত কর্তৃপক্ষকে।
আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি দেখে রীতিমতো শিউরে উঠছেন মেট্রো কর্তারা। সুপার সাইক্লোন পূর্ব কলকাতার গা ঘেঁষে যাওয়ায় একেবারে তছনছ মাটির উপরে থাকা মেট্রো স্টেশনগুলি। উপড়ে গিয়েছে সিগন্যালের পোস্ট। ছিঁড়ে পড়েছে তার। উড়ে গিয়েছে স্টেশনের নাম লাগানো বোর্ড। একেবারে কঙ্কালসার চেহারা একসময়ের সাজানো গোছানো মেট্রো স্টেশনগুলোর।
নেতাজি থেকে নজরুল কবি সুভাষ থেকে ক্ষুদিরাম সর্বত্রই চেহারাটা একই। বালিগঞ্জ স্টেশনের সামনে তো লাইনেই পড়ে রয়েছে বিশালাকার গাছ। যা সরাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হল মেট্রো কর্মীদের। মেট্রো কর্তারাও মানছেন লকডাউনের কারণে নেহাত যাত্রী পরিষেবা বন্ধ ছিল তাই রক্ষে। না হলে প্রাণহানি ঘটার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। যেভাবে একের পর এক স্টেশনে এসকেলেটারের টিনের শেড থেকে কাচ পড়ে এবং প্রতিটি স্টেশনের ভিতরে জল থইথই অবস্থা হয়েছিল, তা যে কোনো ধ্বংসলীলাকে হার মানাবে।
তবে ইতিমধ্যেই মেট্রো স্টেশনগুলো মেরামত করার কাজ শুরু হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে এলিভেটেড স্টেশনগুলো লণ্ডভণ্ড হলেও মাটির তলায় থাকা স্টেশনগুলোর বিশেষ ক্ষতি হয়নি। অবশ্য কারশেডে দাঁড়ানো ট্রেনগুলিরও অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার শেডও উড়ে গেছে। মেট্রোরেলের এক আধিকারিকের কথায়, এমন ধ্বংসলীলা মেট্রোর ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। যেভাবে মাটির উপরে স্টেশনগুলো চুরমার হয়ে গেছে তা দেখা যাচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.