স্টাফ রিপোর্টার: ২৪ ঘণ্টাও হয়নি। এক মুমূর্ষুকে বাঁচাতে কেরল (Kerala) থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে ও নেগেটিভ বম্বে গ্রুপের রক্ত। কিন্তু প্রতিবার কি এমনটা করা সম্ভব? সমাধানসূত্র খুঁজে বের করেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। অতিবিরল রক্তের অধিকারীদের চিকিৎসায় এই সরকারি হাসপাতাল চালু করেছে ‘পেশেন্ট ব্লাড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।’ এই ব্যবস্থাপনায় রোগীর থেকে সংগ্রহ করা রক্তই রোগীকে দেওয়া হবে।
কেরল থেকে আনা রক্ত পেয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) মনসুরা বিবি। কিন্তু, পদ্ধতি যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনই ব্যয়বহুল। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথের হদিশ দিল মেডিক্যাল কলেজের (Medical College Kolkata) হেমাটোলজি বিভাগ। কয়েক সপ্তাহ আগের ঘটনা। মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগে এক রোগীর অস্ত্রোপচার করার আগে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। দেখা গেল রোগী ‘কিড’ গ্রুপের বাহক। একমাত্র ওই গ্রুপের রক্ত পেলেই অস্ত্রোপচার সম্ভব। রোগীর পরিবার হন্যে হয়ে কলকাতার সব ব্লাড ব্যাংকে সন্ধান চালায়। কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজেও ‘কিড’ গ্রুপের রক্ত মেলেনি।
বস্তুত বিরলের মধ্যে বিরলতম এই রক্তের জন্য হাসপাতালের হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের চিকিৎসকরাও খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত দিশা মিলেছে রক্ত সঞ্চালন বিভাগেই। আগেই রোগীর শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রোগীর প্রাণভোমরা সেই রক্ত রেখে দেওয়া হয় হিমায়িত অবস্থায়। অস্ত্রোপচারের সময় সেই রক্ত সরবরাহ করা হয় রোগীর শরীরে। মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনো হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রসূন ভট্টাচার্য এবং অধ্যাপক ডা. বিপ্লবেন্দু তালুকদার এমনটাই করেছিলেন। রোগীর প্রাণ বাঁচে। হাসি ফোটে রোগীর পরিবারের মুখে।
বিপ্লবেন্দুবাবুর কথায়, “শল্য চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করে গ্রুপ যাচাই করবেন। একই সময়ে তিনি ধারণা করতে পারবেন অস্ত্রোপচারের সময় কতটা রক্ত বের হবে। সেই পরিমাণ রক্ত যদি আগেই রোগীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা যায়, তাহলে রোগী নিজের রক্তেই জীবন ফিরে পেতে পারেন।” ডা. বিপ্লবেন্দু তালুকদারের কথায়, “ও নেগেটিভ খুব কম পাওয়া যায়। তার মধ্যে এমন ৩৫টি গ্রুপ আছে যেগুলি বিরলের মধ্যে বিরলতম। তবে রোগীর যদি রক্তাল্পতা বা ক্যানসার সমস্যা থাকে, তবে এই পদ্ধতি কাজ নাও করতে পারে। দুর্ঘটনার পর প্রচুর রক্তপাত হয়। তেমন ক্ষেত্রেও কাজ করবে না এই উপায়।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.