দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা সংক্রমণ, লকডাউনের জেরে এবার ব্যতিক্রমী পয়লা বৈশাখের সাক্ষী রইলেন রাজ্যবাসী। এই আবহে অবশ্য আরও এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেল। এই প্রথম বাংলার এই ঐতিহ্যের পরবে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান শুধুমাত্র বাংলায় ‘শুভ নববর্ষ’ বলেই রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কোনও লিখিত বার্তা ছিল না। অপরপক্ষে, এই বিশেষ দিনে স্বাভাবিক সৌজন্য বজায় রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দিয়ে রাজভবনে মিষ্টি পাঠালেন। সস্ত্রীক রাজ্যপালকে জানালেন শুভেচ্ছাও।
নবান্ন-রাজভবনের সংঘাত নতুন কিছু নয়। যে কোনও ইস্যুতেই উভয়ের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। করোনা আবহেও যে দু’পক্ষের দূরত্ব কমেনি, তাও দেখা গিয়েছে। একদিন আগেই টুইটারে ধনকড় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়ে লেখেন, করোনা আবহে রাজভবনের সঙ্গে ‘লকডাউন’-এ ইতি টানুন। রাজ্যবাসীর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করুন। তবে পয়লা বৈশাখের দিন রাজ্যপালের এই দু কথার ভিডিও বার্তা চোখ এড়িয়ে গিয়েছে অনেকেরই।
অন্যদিকে, দ্বন্দ্ব কাটাতে বরং এগিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্য বজায় রেখে, ঐতিহ্য মেনে তিনি বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন মিষ্টিমুখ করিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। রাজভবনের তথ্য সচিব মানব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যের মন্ত্রী ও শহরের মেয়র ফিরহাদ হাকিম মুখ্যমন্ত্রীর তরফে মিষ্টি নিয়ে পৌঁছলেন রাজভবনে। জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উভয়ে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রচ্ছন্ন দ্বন্দ্ব নিয়ে নবান্নকে প্রতি ঘুরিয়েফিরিয়ে যত বার্তাই দিক রাজভবন, সৌজন্যের এতটুকু ঘাটতি যে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে হয় না, তা আগেও বহুবার দেখা গিয়েছে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, বি আর আম্বেদকরের জন্মদিনকেই হয়ত অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন রাজ্য়পাল। হয়ত তাই বাংলার এই ঐতিহ্যের দিনে শুধুমাত্র ‘শুভ নববর্ষ’ বলেই কর্তব্য সেরেছেন মাত্র। তবে প্রশাসনের তরফে ঐতিহ্য মেনে আচরণের কোনও ত্রুটি নেই। আসলে এটাই বাংলার সংস্কৃতি, এটাই বাংলার নিজস্ব পরিচিতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.