ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: শুনলাম আবার বিয়ে করছ। কোন সাহসে? তাই দেখতে এলাম।
বিয়েবাড়ি ভরতি অতিথি। নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করছেন একে একে অতিথিরা। পাশেই চলছে খাওয়াদাওয়া, হই-হুল্লোড়। হঠাৎ ক’য়েক সেকেন্ডের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে যায় অনুষ্ঠান বাড়ি। অবাক হয়ে সবাই তাকিয়ে রয়েছে। একটাই প্রশ্ন এই মহিলা কে? কী বলছে এসব নতুন জীবনের স্বপ্ন চোখে নিয়ে স্বামীর হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকা নববধূর মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তাঁর মাথায় যেন বজ্রপাত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জোড়াবাগান গৌর লাহা স্ট্রিটের বাসিন্দা জ্ঞানেশ মিশ্রের বিয়ের রিসেপশন চলছিল মালাপাড়ার মধুবন গার্ডেনের ম্যারেজ হলে। সন্ধে থেকে নিমন্ত্রিত অতিথি বন্ধুবান্ধবরা আসতে শুরু করেছেন। অনেক অতিথি খাওয়াদাওয়া সারছিলেন। হঠাৎ তাল কাটল এক মহিলার আগমনে। ওই মহিলা বিয়ে বাড়িতে এসে জ্ঞানেশের প্রথম স্ত্রী বলে দাবি করেন। তারপরই শোরগোল পড়ে যায়। দুই পরিবারের সদস্যরা তখন একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আগন্তুক মহিলার সঙ্গে বিরোধ শুরু হয় বরপক্ষের সদস্যদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডাকা হয় পুলিশ। ওই রাতে ঘটনাস্থলে যায় জোড়াবাগান থানার পুলিশ।
বর-কনের পরিবার ও বেনারস থেকে আসা ওই মহিলাকে থানায় ডাকা হয়। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দাবি, ২০২০ জ্ঞানেশেরের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়েছিল। তাঁকে ডিভোর্স না দিয়ে ফের বিয়ে করেছেন স্বামী। রেজিস্ট্রির কাগজপত্রও থানায় নিয়ে আসেন ওই মহিলা। পালটা জ্ঞানেশ ও তাঁর পরিবারের দাবি, ছেলে প্রথম স্ত্রীকে আগে ডিভোর্স দিয়েছে। তারপরই দ্বিতীয় বিয়ে করে। অবশ্য ডিভোর্সের কাগজ পুলিশকে দেখাতে পারেননি জ্ঞানেশ। প্রতারণার অভিযোগ তুলে জ্ঞানেশের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেনারস থেকে আসা ওই মহিলা সঙ্গে জ্ঞানেশের আগে বিযে হয়েছে। বিয়ে রেজিস্ট্রির কাগজে দু’জনের সই রয়েছে। জ্ঞানেশ প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে না থাকলেও তাঁদের ডিভোর্স হয়নি। ডিভোর্সের কাগজপত্র জ্ঞানেশ দেখাতে পারেননি। নববধূর স্বজনরা জানিয়েছেন, আগের বিয়ের কথা জ্ঞানেশ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করা হয়। এদিকে দুই বউ এর মাঝে সংকটে পড়েছেন জ্ঞানেশ। সতীনকে নিয়ে ঘর করবেন না বলে প্রথম স্ত্রী পুলিশকে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। জ্ঞানেশ কোন বউকে সঙ্গে রাখবেন তা নিয়ে চিন্তিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.