অর্ণব আইচ, কলকাতা: বিয়ের দু’মাসের মধ্যে গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। মৃতের নাম পূজা দাস(২৩)। পণের দাবিতেই তাদের মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মৃতার বাপেরবাড়ির তরফে এই অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ অন্যান্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার হরিদেবপুরের মতিলাল গুপ্ত রোডে। মৃতের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ, গতকাল রাতেই মারধর করে পূজাকে মেরে ফেলা হয়। তারপর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়েও দেওয়া হয়। সকালবেলা পরিকল্পনা মাফিক পাড়ার লোককে জানানো হয় আত্মঘাতী হয়েছে গৃহবধূ। তারপর স্থানীয় বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই পূজার বাপেরবাড়িতে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়েই হাসপাতালে যায় পূজার আত্মীয়রা। মেয়েকে দেখেই বুঝতে পারে কী ঘটেছে। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সুযোগ বুঝে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ক্ষুব্ধ আত্মীয়দের একদল মারমুখী হয়ে হানা দেয় শ্বশুরবাড়িতে। দরজা ভেঙে ঘরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়। আত্মীদের প্রশ্ন, মেয়ে যদি আত্মঘাতীই হয়, তাহলে আগে কেন বাপেরবাড়িতে খবর দেওয়া হল না ? হাসপাতালে যাওয়ার পর কেন জানানো হল ? আসলে প্রমাণ লোপাটের জন্য এসব করা হয়েছে। মেয়ের দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। পূজা মৃত্যুর আগে নাকি বাড়ির লোকদের এসএমএসও করেছিলেন।
[ পুলিশ এসে বিয়ে আটকাল নাবালিকার, তবু বউভাতের ভোজ খেল গোটা গ্রাম ]
মৃতের পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, গত ২৮ নভেম্বর হরিদেবপুরের স্বপন দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় পূজার। বিয়ের আগে পেশায় বিমা সংস্থার কর্মী স্বপনবাবু(৩০)পণের দাবি করেছিলেন। চার লক্ষ টাকা পণ চাওয়া হয়েছিল। অনেক কষ্টে দু’লক্ষ টাকা জোগাড় করা হয়। বিয়ের সময় ওই টাকাই বরপক্ষকে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে বাকি পণের দাবিতে প্রায়ই অত্যাচার চলত। মারধর করা হত পূজাকে। বাপেরবাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপও দেওয়া হত। বেহালার বুড়োশিবতলায় বাপের বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটিও করেছেন পূজা। কিন্তু বাবার আর্থিক সামর্থ্যে না কুলোনেোয় বাকি টাকাটা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তারপর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার।
পূজা আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি খুন, তা জানতে মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.