শুভঙ্কর বসু: শরীরে যতই মারণ ব্যাধি বাসা বাধুক না কেন, গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হলে থাকতে হবে জেলেই। সম্প্রতি দু’টি পৃথক মামলায় যক্ষ্মা ও হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত দুই অভিযুক্ত জামিন নাকচ করে এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের আবেদন জানায় পকসো মামলায় অভিযুক্ত বিপ্লব বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। শিলিগুড়ি মহিলা থানায় গত ডিসেম্বরে তার বিরুদ্ধে শিশু নিগ্রহের অভিযোগের মামলা দায়ের হয়। হাই কোর্টে জামিনের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বিপ্লবের আইনজীবী পি রায় জানান, তাঁর মক্কেল যক্ষ্মার মত সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে তিনি জেলে থাকলে ব্যাধি অন্যদেরও সংক্রমিত করতে পারে। তাই অবিলম্বে তার জামিন মঞ্জুর করা হোক। যদিও সরকারি কৌঁসুলি সুদীপ ঘোষ, পাল্টা জানান নিগৃহীতা গোপন জবানবন্দিতে অভিযুক্ত নাম উল্লেখ করেছে। ঘটনার সঙ্গে তার সরাসরি যোগ রয়েছে। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, যক্ষার মত সংক্রামক রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেও এহেন গুরুতর অপরাধে তা জামিনের যোগ্য কারণ হতে পারে না।
বিপ্লবের মতই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের আবেদন জানায় মাদক মামলায় অভিযুক্ত শেখ শাহাদাত। তার আইনজীবী, মহম্মদ খাইরুল দাবি করেন, শাহাদাত হেপাটাইটিস-বি-এর মত মারণ রোগে আক্রান্ত। সঠিক চিকিৎসা না হলে তিনি মারা যেতে পারেন। এই কারবারের সঙ্গে তার কোন যোগ নেই। যে নৌকা করে মাদক পাচার হচ্ছিল শাহাদাত তার মাঝি ছিলেন মাত্র। অজান্তেই তার নৌকায় মাদক চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন পাল্টা দাবি করেন, যে পরিমাণ মাদক উদ্ধার হয়েছে তা অজান্তে চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, হেপাটাইটিস বি একটি মারণব্যাধি ঠিকই, কিন্তু কোনও মারণ রোগ দেখা দিলেই যে তা জামিনের উপযুক্ত কারণ হিসেবে গণ্য হবে এমনটা নয়। যদিও দুই ক্ষেত্রেই জেল কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্তদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.