ফাইল ফটো
শুভঙ্কর বসু: একজন ছাড় পেলে সেই উদাহরণ দেখিয়ে একে একে বাকিরাও পার পেয়ে যাবে! করোনার দোহাইয়ে এমনই জব্বর ফন্দি এঁটে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বুদ্ধগয়া ও খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তথা জেএমবি জঙ্গি আব্দুল মতিন।
সশরীরে শুনানির ক্ষেত্রে সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিলের যে সুযোগ থাকে, ভারচুয়াল শুনানিতে তা সম্ভব নয়। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চেয়েছিল মতিন। অবশেষে সরকারি কৌঁসুলি শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়ের তৎপরতায় তা ঠেকানো গিয়েছে।
বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের পর গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে জেএমবি জঙ্গি মহম্মদ পয়গম্বর। তাকে জেরা করে জহিদুল ইসলাম, আদিল শেখ-সহ একাধিক জেএমবি জঙ্গির হদিশ পায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। এসব জঙ্গিদের দীর্ঘ জেরার পর শেষে উঠে আসে আব্দুল মতিনের নাম। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে যে আইইডিগুলি লাগানো হয়েছিল তাতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল মতিনের। এছাড়াও খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-সহ একাধিক নাশকতামূলক কাজের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এই মতিন। গোয়েন্দাদের সঙ্গে একাধিকবার লুকোচুরি খেলার পর অবশেষে গত বছর কেরলের মালাপুরম থেকে ধরা পড়ে সে।
তদন্তে উঠে এসেছে, অসমের বরপেতার বাসিন্দা মতিন ২০১০ সালে মালদার কালিয়াচকের শেরশাহ মাদ্রাসায় পড়াকালীন জেএমবি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। শিমুলিয়ার মাদ্রাসায় সে আইইডি বানানোর বিশেষ প্রশিক্ষণ নেয়। পাশাপাশি তার দায়িত্ব ছিল, ফান্ড কালেকশন ও নব্যদের জিহাদি মন্ত্রে দীক্ষিত করা। মূলত তার দক্ষতাতেই গোটা দেশে জেএমবি জাল বিস্তার হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই মতিন চম্পট দেয়। কিন্তু নাসিরুল্লাহ, মৌলানা ইউসুফ, সইকুলের মতো প্রথম সারির জেএমবি জঙ্গিদের সঙ্গে তার গোপন যোগাযোগ ছিল।
কেরলে থাকাকালীন অর্থ সংগ্রহের জন্য সে ও তার দলবল একাধিক ডাকাতি ও করেছে বলে জানা গিয়েছে। অথচ এহেন এক জঙ্গি মহামারীর দোহাই দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তর এজলাসে ভিডিও কনফারেন্স শুনানিতে জামিনের আবেদন জানায় তার আইনজীবী সফদর আজম। কিন্তু সরকারপক্ষও তৈরি ছিল। শাশ্বতগোপালবাবু তৎক্ষণাৎ আদালতের সামনে যাবতীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ তুলে ধরে জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন। সঙ্গে সঙ্গে জামিন নাকচ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.