Advertisement
Advertisement

বাঙালির নতুন হুজুগ, মূর্তি বিক্রিতে বিশ্বকর্মাকে টক্কর গণেশের

সিদ্ধিদাতার সৌজন্যে সিদ্ধিলাভ হচ্ছে মৃৎশিল্পীদেরও।

Kolkata gears up for Ganesh Chaturthi
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 10, 2018 6:15 pm
  • Updated:September 10, 2018 6:15 pm  

সুলয়া সিংহ: গণপতি বাপ্পা মোরিয়া। গণেশ চতুর্থীতে মুম্বইয়ের আকাশ-বাতাস ছেয়ে যায় এই ধ্বনিতে। দেশ-দেশান্তরের ভক্তের ঢল নামে বাণিজ্যনগরীতে। আর কলকাতার কুমোরটুলিতে তখন চলে তার মায়ের আগমনের প্রস্তুতি। এ শহর এমন ছবিতেই অভ্যস্ত ছিল এতকাল। কিন্তু ইদানীং আবর সাগরের হাওয়া এসে লেগেছে গঙ্গার তীরে। আর তাতেই ভেঙেছে তিলোত্তমার মিথ। বিশ্বকর্মার আগে সিদ্ধিদাতাকেই ধুমধাম করে স্বাগত জানাচ্ছে কলকাতাও।

[এই পৌরাণিক রীতিগুলি মেনেই আজও ঘরে ঘরে পালিত হয় জন্মাষ্টমী]

হাতে সময় থাকলে একবার কুমোরটুলিতে ঢুঁ মারতে পারেন। ছবিটা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রত্যেক মৃৎশিল্পীর ডেরাতেই সারি সারি লাইন দিয়ে বসে রয়েছেন বিঘ্নহর্তা। কৈলাস থেকে মায়ের বাপের বাড়ি আসার আগে এ শহরেই আবির্ভাব ঘটবে ছেলের। আগামী বৃহস্পতিবার শুরু গণেশ চতুর্থী উৎসব। তার আগে গণেশের চাহিদা তুঙ্গে। এক ফুট থেকে ১২ ফুট, সব মূর্তিই বিক্রি হচ্ছে দেদার। হোক না সামনেই বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব। শহরের অলি-গলিতে উঁকি দিক না থিমের ব্যানার। সিদ্ধিদাতার আগমনের চাকচিক্যে কিন্তু কোনও ভাটা পড়ছে না। জমকালো মণ্ডপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সবেরই আয়োজন হচ্ছে। আবার কার গণেশ কত বড়, তা নিয়েও  উদ্যোক্তাদের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিযোগিতা। কিন্তু ছবিটা হঠাৎ পালটে গেল কীভাবে? রাতারাতি কোন জাদুবলে গণেশ ভক্তের সংখ্যা বেড়ে গেল এ রাজ্যে? তিনি তো কেবল আসতেন হালখাতায়। এখন পুজোর আগেও!

Advertisement

রাজনৈতিক একটা ব্যাখ্যা খাড়া করাই যায়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিন্দুত্ববাদ। সাম্প্রতিক অতীতে এ রাজ্যেও বারবার তার আঁচ লেগেছে। জাঁকজমকপূর্ণ হনুমান জয়ন্তী, পাড়ায় পাড়ায় রাম নবমীও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে। কিন্তু একটু ভিতরে ঢুকলে দেখা যাবে, এসব উৎসবে বেশি মেতেছেন হিন্দিভাষীরাই। তাহলে গণেশ পুজোর ক্ষেত্রেও কি তাই? জোরাল গলায় নাকচ করলেন শিল্পী নব পাল। বললেন, ‘অনেক বাঙালির বাড়ি বা আবাসনেও পুজো হচ্ছে গণেশের। বাঙালিদের থেকেও ছোট-বড় নানা মূর্তির বায়না পেয়েছেন শিল্পীরা।’ আর সিদ্ধিদাতার সৌজন্যে সিদ্ধিলাভ হচ্ছে মৃৎশিল্পীদেরও। বিশ্বকর্মাকে ছাপিয়ে অনেক চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিনায়কের মূর্তি। মানে বাঙালির হাত ধরেই মৃৎশিল্পের আঁতুড়ঘরে পুজোর আগেই অগ্রিম পা রেখেছেন মা লক্ষ্মী। 

[স্বপ্নে সাপ দেখেছেন? জানেন ঘুমের মধ্যে এ কীসের ইঙ্গিত?]

উদ্যোক্তাদের একাংশের মতে, বাঙালি হুজুগে। তাদের বারো মাসে তেরো পার্বণ। ভ্যালেনটাইনস ডে বা ধনতেরাস, কোনওটাই বাংলার উৎসব না হলেও ধীরে ধীরে ঠাঁই নিয়েছে বাঙালির ক্যালেন্ডারে। কয়েক বছর আগেও যে শব্দটির সঙ্গে বিশেষ পরিচিতই ছিল না বাঙালিরা, সেই উৎসবেও এখন সোনার দোকানের বাইরে লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে কার্পণ্য করে না। তার সাম্প্রতিকতম নিদর্শন এই গণেশ চতুর্থী। তাই রাজনৈতিক রং থাকুক বা না থাকুক, সরস্বতী বা বিশ্বকর্মার সঙ্গে এ শহরে জোরদার টক্কর শুরু গণপতি বাপ্পারও। আর তাতে যদি কুমোরটুলির আকাশে রামধনুর ছটা দেখা দেয়, মন্দ কী!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement