কৃষ্ণকুমার দাস: চিনের ইউহানের দেখানো পথে হেঁটেই করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে চায় শহর কলকাতা। আজ, মঙ্গলবার থেকেই মহানগরের রাস্তায় একসঙ্গে ২০টি বড়মাপের জেট-স্প্রে গাড়ি দিয়ে জীবাণুনাশক রাসায়নিক জলে মিশিয়ে ছড়ানো শুরু হচ্ছে।
করোনার গর্ভগৃহ ইউহান প্রদেশে ব্যাপক হারে এই সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মিশ্রিত স্প্রে ছড়িয়েই ভাইরাসকে ধ্বংস করে মৃত্যুর হার কমিয়ে এনেছে চিন। সোমবার বেশি রাতে জরুরি ভিত্তিতে একটি বিখ্যাত সংস্থার মাধ্যমে ওই রাসায়নিক পুরসভার হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জেট-স্প্রে মেশিন ছাড়াও করোনা সংক্রমিত হতে পারে এমন সন্দেহে চিহ্নিত বহুতলের বিভিন্ন ফ্লোরে ওই রাসায়নিক বিশেষ ধরনের ফগিং মেশিন দিয়ে ছড়িয়ে ভাইরাস ধ্বংস করবেন পুরসভার কর্মীরা।
প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে মহানগরের সমস্ত ঘন জনবসতি, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য দফতরের চিহ্নিত এলাকায় ওই জীবাণু ধংসকারী রাসায়নিক-স্প্রে ছড়ানো হবে বলে এদিন জানিয়েছেন মেয়র। বলেন, “দিনকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় রাজ্যসভার সাংসদদের তহবিলের তরফে ২০টি জেট-স্প্রে গাড়ি দিয়েছিলেন পুরসভাকে। মূলত রাজপথ ধোয়া ও রাস্তার ডিভাইডারের গাছে জল দেওয়ার জন্য ওই গাড়িগুলি ব্যাবহার হওয়ার কথা। কিন্তু এবার ওই গাড়ির জলে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মিশিয়ে শহরের বিভিন্ন ঘনবসতি এলাকায় ছড়ানো হবে।”
চিনে এভাবে রাজপথে ভাইরাস ধ্বংসকারী স্প্রে ছড়িয়ে সুফল পাওয়া গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মেয়রকে জানিয়েছেন। পুরসভা তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই রাসায়নিক অর্ডার দিয়ে নিয়ে এসে কলকাতাকে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা শুরু করল বলে মেয়র জানান। আজ প্রথমে SSKM, বাঙ্গুর, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় জেট-স্প্রে জলের গাড়ি ভাইরাস ধ্বংস করতে কাজ শুরু হচ্ছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শহরে ফগিং মেশিন বেশ কয়েক বছর হল বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কারণ, ওই ফগিং মেশিন পুরোটা লোকদেখানো ছিল এবং উৎসেই মশা ধ্বংস করে সুফল পেয়েছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষরা। কিন্তু করোনার হাত ধরে ফের বিশেষ ধরনের ফগিং মেশিন ঢুকে পড়ল পুরসভায়। এই যন্ত্র দিয়েই ওই জীবাণুনাশক সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট স্প্রে করা হয়। বস্তুত সেই কারণেই জরুরিভিত্তিতে অর্ডার দিয়ে একসঙ্গে ওই ২০টি বিশেষ ধরনের মেশিন নিয়ে আসা হয়েছে। ওই ফগিং মেশিন দিয়ে পঞ্চসায়রের সেই বহুতলের বিভিন্ন ফ্লোরে স্প্রে করানো হতে পারে। এদিনও মেয়র পুরভবনে এসেছিলেন দুপুরে। অফিসারদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত। ঠিক হয়েছে, পরিবহন থেকে নেওয়া দশটি বিশেষ বাসে করে পুরসভার জঞ্জাল সাফাই কর্মীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌঁছে দেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.