অর্ণব আইচ: ‘বাপ নম্বরি বেটা দশ নম্বরি।’ কাদের খান ও শক্তি কাপুর অভিনীত সিনেমা। কেউ দেখেছেন, কেউ দেখেননি। তবে বাস্তবে বাবা-ছেলের ঠগবাজির কায়দা দেখে খোদ পুলিশকর্তারাও তাজ্জব। অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের কোটি টাকা হাতিয়ে দেদার ফুর্তি অমরেন্দ্র ব্রহ্মচারী ও তার ছেলে রাহুলের। তবে প্রতারক বাবা-ছেলে ডালে ডালে চলতে পুলিশও চলে পাতায় পাতায়। দুজনকেই গ্রেুপ্তার করা হয়েছে।
কীভাবের ফাঁদ পেতেছিল অমরেন্দ্র ও তাঁর ছেলে? পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য কলকাতার এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক কোটি টাকার উপর জমিয়েছিলেন। তাঁকেই টার্গেট করেন অমরেন্দ্র ব্রহ্মচারী ও তার ছেলে রাহুল। ওই ব্যক্তিকে তারা মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখার পরামর্শ দেয়। সেই সঙ্গে টোপ, এই বিনিয়োগের পরিবর্তে প্রচুর টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। প্রথমে কিছু টাকা লগ্নি করেন ওই ব্যক্তি। টাকা ফেরতও পান। ক্রমে সারা জীবনের সঞ্চয় ১ কোটি ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা তিনি বাবা ও ছেলের মাধ্যমে লগ্নি করেন মিউচুয়াল ফান্ডে।
কিন্তু ওই বিপুল টাকা হস্তগত করে নেয় অমরেন্দ্র ও রাহুল। অভিযোগ, প্রায় পুরো টাকাই মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির বদলে বাবা-ছেলেই উড়িয়ে দেয়। ওই টাকা দিয়ে প্রচুর সোনার গয়না কেনা হয়। বাবা ও ছেলে আলাদাভাবে বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেল ও পানশালায় টাকা ওড়াতে শুরু করে। কিছুদিন আগে ওই ব্যক্তি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা তুলতে যাওয়ার সময়ই জানতে পারেন যে, প্রায় কিছুই জমা পড়েনি ফান্ডে। এর পরই ওই ব্যক্তি মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে প্রথমে মোবাইলের সূত্র ধরে ছেলে রাহুল ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে।
তবে সেই সময় বাবার সন্ধান মেলেনি। ছেলেকে জেরা করেও কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, বাবা অমরেন্দ্র টাকার জন্য কয়েকটি জায়গায় অন্যদের ফোন থেকে যোগাযোগ রাখছে। সেই সূত্র ধরেই রবিবার রাতে পুলিশ বালিগঞ্জ এলাকার বিলাসবহুল হোটেলে হানা দেয়। গ্রেপ্তার হয় অমরেন্দ্র। বাবা ও ছেলেকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়। যদিও বাবা ও ছেলে দু’জনেরই দাবি, তারা আলাদাভাবে ফুর্তি করে ও গয়না, দামী আসবাব কিনে পুরো টাকা শেষ করে ফেলেছে। দু’জনের দাবিই যাচাই করতে কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.