সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কসবার ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে (Fake Vaccination Camp) দেওয়াই হয়নি করোনার ভ্যাকসিন। ওই কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে বিসিজি (BCG) অথবা হামের টিকা। ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে ব্যবহৃত ভায়ালের গায়ে ছিল না ব্যাচ নম্বর কিংবা এক্সপায়ারি ডেটও। শুধুমাত্র সবুজ রংয়ের একটি স্টিকারই লাগানো ছিল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ভুয়ো টিকাকরণ কাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি সিএমওএইচ ডাঃ রণিতা সেনগুপ্ত।
গত মঙ্গলবার কসবার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে করোনার টিকা নিতে যান যাদবপুরের তারকা তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। টিকা নেওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও আসেনি কোনও মেসেজ। তাতেই সন্দেহ হয় সাংসদের। তিনি কলকাতা পুরসভায় তা জানান। তারপরই সামনে আসে দেবাঞ্জন দেবের ‘কীর্তি’। নিজেকে IAS অফিসার পরিচয় দিয়ে এই ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প চালায় সে। জানা গিয়েছে, কসবার পাশাপাশি নর্থ সিটি কলেজেও গত ১৮ জুন টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করে দেবাঞ্জন। ওই ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে অধ্যক্ষ, অধ্যাপক-সহ কমপক্ষে ১০০ জন ভ্যাকসিন নেন। কীভাবে দেবাঞ্জন ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করল, তা নিয়ে কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অনেকেই। যদিও সাংবাদিক বৈঠক করে অতীন ঘোষ (Atin Ghosh) সাফ জানিয়ে দেন, দেবাঞ্জনকে কোনও অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুরসভা। টিকাকরণের পর কোনও মেসেজ না পাওয়া সত্ত্বেও কেন কলকাতা পুরসভায় অভিযোগ জানালেন না কেউ, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
এদিকে, ভুয়ো টিকাকরণ কাণ্ড সামনে আসার পর ওই ক্যাম্পে টিকা নেওয়া প্রত্যেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কী ধরনের ভ্যাকসিন নিয়েছেন, সেই চিন্তা করতে থাকেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি সিএমওএইচ ডাঃ রণিতা সেনগুপ্ত জানান, কোভিশিল্ড (Covishield) কিংবা কোভ্যাক্সিন (Covaxin) নয়, হাম কিংবা বিসিজি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) টিকার ভায়ালের তুলনায় অনেকটাই মাপে ছোট ছিল ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ভায়াল। এছাড়াও এই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে টিকা নেওয়া অন্তত ৭০ জনের এদিন স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, বেশিরভাগ টিকাপ্রাপকেরই কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা যায়নি। হাতে গোনা মাত্র কয়েকজনের মাথা যন্ত্রণা এবং ত্বকে কালো দাগের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁদের দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে ডিরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল। ওই ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ভায়ালগুলিকে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে। ধৃত দেবাঞ্জন দেবের রাজডাঙ্গার অফিসে হানা দিয়েও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার ভ্যাকসিন অডিট করে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিও জানিয়েছেন।
দেখুন ভিডিও:
ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে টিকা নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করলেন মিমি। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলেই জানান। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেন যাদবপুরের তারকা সাংসদ।
View this post on Instagram
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.