ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের প্রতিমা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শৈশবের ছাড়পত্র। হারিয়ে যাওয়া দিনে এক লহমায় পৌঁছে যাওয়া। এস বি পার্কের পুজোর আবহে ছিল এমনই একমুঠো খুশির ছোঁয়া। রঙের উল্লাস, সুর আর ছন্দে আনন্দের হরকরা হয়ে উঠেছিল এবারের পুজো(Kolkata Durga Puja 2024)। পুজো শেষ হলেও সেই প্রতিমা দেখার পালা কিন্তু শেষ হচ্ছে না। বেহালার ‘চাঁদের হাট’ শিল্পক্ষেত্রে সংরক্ষিত থাকবে এই প্রতিমা।
শিল্পী পূর্ণেন্দু দে সাজিয়ে তুলেছিলেন এবারের মণ্ডপ। বিষয় ছিল ‘আমাদের দুগ্গা মা’। শিশুদের কল্পনা যেভাবে ছড়িয়ে পড়ে রঙে-রেখায়, সেই আদলেই ছিল মণ্ডপের রূপায়ণ। কলকাতার থিম পুজো বহু অভিনব ভাবনারই সাক্ষী থেকেছে। বিষয়ভাবনা নিয়ে শিল্পীরা হরেক এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। তবে, যেভাবে একজন শিশু দুর্গা প্রতিমা কল্পনা করে তা যে মণ্ডপে উঠে আসতে পারে, সেই ভাবনাই দর্শককে মোহিত করেছে। একজন শিশুর কল্পনা কোনও প্রথাগত গণ্ডিতে বাঁধা থাকে না। শিশুমন তার চিন্তাভাবনায় এমন অনেক কিছুই কল্পনা করতে পারে, যা বড়রা সহজে ভেবে উঠতে পারে না। সেই কল্পনার উদ্ভাসেই সেজে ওঠে তাদের আঁকার খাতা। আঁকা-বাকা রেখায় থাকে সারল্যের স্পর্শ। রঙের ব্যবহারেও থেকে যায় বৈচিত্র। শিল্পী পূর্ণেন্দু দে ঠিক সেই সারল্য আর বৈচিত্র্যকেই ভরকেন্দ্র করেছিলেন তাঁর রূপায়ণে। একজন পরিণত শিল্পী যেন নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন অন্য এক জগতে। আর একই সঙ্গে দর্শককেও হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছেন শৈশবের অনাবিল দুনিয়ায়। মণ্ডপের সামনে রাখা স্কুলের গাড়ির সৃজন থেকে গোটা মণ্ডপেই ছিল শিশুর কল্পনার অভিনব প্রকাশ। প্রতিমার নয়নে সেই সারল্য। এমনকী যে বাহনে চেপে দুগ্গা আর তাঁর সন্তানরা আসেন, শিশুকল্পনার আঙ্গিকে সেই বাহনদের চেহারাও হয়েছে বড়সড়। সব মিলিয়ে ছোট-বড় সব দর্শকের কাছেই এবারের এই পুজো যেন সাজিয়ে রেখেছিল খুশির পসরা।
সেই প্রতিমাই এবার দেখার সুযোগ মিলবে বছরভর। চাঁদের হাট, যা কিনা শিল্প ও শিল্পীর যৌথখামার, সেখানেই সংরক্ষিত থাকবে প্রতিমা। চাঁদের হাটের পক্ষ থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বভাবতই খুশি পুজোর আয়োজক সঞ্জয় মজুমদার। বললেন, ‘গোটা পুজো জুড়েই অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। চাঁদের হাট যে আমাদের প্রতিমা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমরা গর্বিত, আনন্দিত। চাঁদের হাট শিল্পীদেরই জায়গা, সকলেই দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত, তাঁদের কাছে এই শিল্পের কদর পাওয়া অবশ্যই বাড়তি পাওনা। ওখানে অনেক বাচ্চা আঁকা শিখতে যায়। আশা করি তারা আনন্দ পাবে।’
পুজোশিল্প সংরক্ষণের এই প্রয়াসের দরুন ‘আমাদের দুগ্গা মা’-কে দেখতে পাবেন বহু শিল্পরসিক মানুষই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.