Advertisement
Advertisement

Breaking News

থ্যালাসেমিয়া

ডোনার জোগাড় করতে নাজেহাল মা, শংকর ডাক্তারের রক্তেই সুস্থ হল ছোট্ট জগন্নাথ

ডাক্তার সময়মতো ‘বি পজিটিভ’ না হলে সত্যিই শিশুটিকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যেত।

Kolkata: Doctor donates blood to thalassemia ptient to save his life
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:June 1, 2020 5:31 pm
  • Updated:June 1, 2020 5:31 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল কচি মুখটা। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা চারের ঘরে নেমে গিয়েছিল। বিছানায় লেগে গিয়েছিল আট বছরের ছোট্ট শরীর। রক্ত চাই। বি পজিটিভ।

শিশুটির মা অনেক ছোটাছুটি করে একজনকে রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু সেই রক্ত কাজে লাগেনি। রক্ত সঞ্চালনের সময়ই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে জগন্নাথ হেমব্রমের। বাতিল করতে হয় সেই রক্ত। অনেক চেষ্টা করেও নতুন করে আর ডোনার জোগাড় করতে পারেননি জগন্নাথের মা। অবশেষে এগিয়ে এলেন এক জুনিয়র চিকিৎসক। যার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। তিনি সময়মতো ‘বি পজিটিভ’ না হলে কিন্তু সত্যিই শিশুটিকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যেত। এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

Doctor

ডা. শংকর দে। কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের এই তরুণ চিকিৎসকই কোভিড আবহে দেবদূত হয়ে জীবনদান করেছেন কল্যাণীর বীরসিঁধুনগরের জগন্নাথকে। শংকর বলেলেন, “ছেলেটির মায়ের অসহায়তা নিজের চোখে দেখেছিলাম। সেদিন রাতে আমি পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগে ‘অন কল’ ছিলাম। ছেলেটির অবস্থা সত্যিই খুব সংকটজনক হয়ে পড়েছিল। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যেখানে বারো থাকার কথা, সেখানে ৪.৬-এ নেমে এসেছিল। তীব্র অ্যানিমিক হয়ে পড়েছিল থ্যালাসেমিক জগন্নাথ। বিছানা থেকে উঠে বসতেও পারছিল না। এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ওই সময় রক্ত না দিলে পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যেত।” শংকরকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. কৌশিক চাকি। তিনি জানালেন, “কোভিড আবহে ডাক্তাররা যে আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছেন তার প্রমাণ শংকরের এই রক্তদান। আমরাও জুন মাসে ডাক্তাররা জোট বেঁধে রক্তদান করব। মানুষকে বোঝাব, রক্ত দিলে ইমিউনিটি কমে না।”

[আরও পড়ুন: হাসপাতালে যেতে ভয়? চিন্তা নেই, এবার বাড়ি থেকেই হবে কোভিড পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ]

শংকরের রক্ত শরীরে নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে জগন্নাথ। রবিবার বাড়িও ফিরে গিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বিপন্নতা। সহজলভ্য গ্রুপ হওয়া সত্ত্বেও ‘বি পজিটিভ’ ডোনার জোগাড় করতে পারেননি জগন্নাথের মা। কেন এমন হচ্ছে? বাচ্চাটির মায়ের সঙ্গে কথা বলে শংকর যা জানতে পেরেছেন তা উদ্বেগজনক। বেশিরভাগ রক্তদাতাই করোনা আবহে বাড়ি থেকে বেরতে রাজি হননি। কেউ আবার জানিয়েছে, রক্ত দিলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। আর শরীর দুর্বল হলে করোনা কাবু করে ফেলবে তাদের।

যদিও এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল বলেই জানিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রসূণ ভট্টাচার্য। তাঁর মত, এই ধারণা একেবারেই ভুল। রক্ত দিলে শরীর দুর্বল হয় না। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “লকডাউনের জন্য রক্তদান শিবির করার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছিল। তাই সমস্যা হয়েছে। এবার ছোট ছোট শিবিরের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি রক্তের সংকট কেটে যাবে।”

[আরও পড়ুন: আনলক ওয়ানে কাজে বেরনোর পালা, সংক্রমণ ঠেকাতে কী করবেন, জানাচ্ছেন চিকিৎসক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement