অভিরূপ দাস: প্রয়োজনের তুলনায় প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন কম। ধাপার বায়ো-সিএনজি প্ল্যান্ট (Bio CNG Plant) বর্ধিত করার ঘোষণা করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভার সমস্ত গাড়ি বর্জ্য থেকে তৈরি প্রাকৃতিক গ্যাস বা বায়ো সিএনজিতে চলুক, এমনটাই চান কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাতে দূষণ কমবে অনেকটাই। এমন চিন্তা থেকেই গত ফেব্রুয়ারিতে ২০টি বায়ো-সিএনজি চালিত ওয়াটার স্প্রিংকলার কেনে কলকাতা পুরসভা। এ ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার গাড়িগুলো দিয়ে রাস্তার দু’পাশের উদ্যানে জল ছেটানো হয়। বাস্তবে মাত্র দু’টি গাড়ি ছাড়া বাকিগুলি গ্যাসের অভাবে রাস্তায় নামানো যাচ্ছে না।
সম্প্রতি শীতের শহরে বাতাসে দূষণ কমাতে ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার চালানোর নির্দেশ দেন মেয়র। সেখানেই তাঁর নজরে আসে বিষয়টি। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিক মেয়রকে জানান, এই মুহূর্তে পুরসভার প্রয়োজন ফি-দিন ৫০০ কিলোগ্রাম বায়ো সিএনজি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর ধাপায় যে বায়ো সিএনজি প্ল্যান্টের উদ্বোধন হয়েছিল সেখানে প্রতি দিন ১৬০ কিলোগ্রাম গ্যাস তৈরি হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মমতা-নীতীশ-অখিলেশরা নারাজ, বুধবার INDIA জোটের বৈঠক স্থগিত]
এই মুহূর্তে ধাপার বায়ো-সিএনজি প্ল্যান্টে প্রতিদিন ৫ টন গ্যাস তৈরি হচ্ছে। মেয়র জানিয়েছেন, এই ক্ষমতা বাড়াতে হবে অবিলম্বে। ধীরে ধীরে পুরসভার সমস্ত গাড়ি বায়ো-সিএনজিতে রূপান্তরিত করে দেওয়া হবে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিক জানিয়েছেন, চিন্তাভাবনা করছি কীভাবে বাড়ানো যায়। মেয়রের বক্তব্য, ‘‘চিন্তা ভাবনা নয়। ডু ইট নাও।’’ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পরামর্শ, ‘‘কবে জমি পাবেন তার জন্য অপেক্ষা করলে হবে না। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সমস্ত কাজ করতে হবে। ধাপায় অনেকটা জায়গা খালি পড়ে আছে। এখুনি সেখানে বায়ো সিএনজি প্ল্যান্ট বর্ধিত করুন।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, আপাতত গাড়ি চালাতে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস কিনছে কলকাতা।
[আরও পড়ুন: ‘পুলিশ তো ওঁর পকেটে’, অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতায় ফের CBI-এর হাতিয়ার ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব]
প্রাথমিকভাবে পুরসভার পরিকল্পনা ছিল, পচনশীল বর্জ্য দিয়ে নিয়মিত পাঁচ টন করে বায়ো সিএনজি গ্যাস উৎপাদন করা হবে। ধাপে ধাপে ৫০০ টন গ্যাস উৎপাদন হলেই, পুরসভা তা দিয়ে নিজস্ব গাড়ি চালাবে। কিন্তু, পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রের খবর, ভালো মানের পচনশীল বর্জ্যের অভাবে গ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যায়নি। ভালো মানের বর্জ্য পেতে এবার শহরের সমস্ত পাঁচতারা হোটেলকে চিঠি দিচ্ছে পুরসভা। তাদের থেকে বর্জ্য নিতে যায় পুরসভা। বর্তমানে যা উৎপাদন হচ্ছে, তাতে মাত্র দু’টি গাড়ি চালানো যায়। বর্তমানে কলকাতায় সিএনজির দাম প্রতি কেজি প্রায় ৭৯ টাকা, ২০টি গাড়ি চালাতে দিনে ১৪০০-১৫০০ কেজি গ্যাস দরকার। খরচ মাসে প্রায় ১৬ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা থেকে ১৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু পুরসভার আর্থিক টানাটানির মধ্যে এতদিন সেটা সম্ভব হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.