অভিরূপ দাস: করোনা রোগীর নাক থেকে খুলে পরেছে মাস্ক। আর পাঁচজন সাধারণ রোগীর সঙ্গেই সিটি স্ক্যানের লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনিও। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমন ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ প্রত্যেকেরই।
শরীরে বাসা বেঁধেছে ছোঁয়াচে করোনা ভাইরাস (Corona Virus)। কোভিড ওয়ার্ড থেকে অন্যত্র সরাতে হলে এমন রোগীকে মাস্ক, পিপিই কিট পরিয়ে নিয়ে যাওয়াই নিয়ম। কিন্তু সেই নিয়মের অন্যথা চোখে পরল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College Hospital)। সোমবার দেখা যায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের ন’তলা থেকে করোনা রোগীকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাচ্ছেন নার্স। সেই করোনা রোগীর নাক থেকে খুলে পরেছে মাস্ক। পরনে পিপিই (PPE) কিটও নেই। এমন রোগীকে সাধারণ রোগীদের পাশ দিয়েই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ব্যক্তি যে করোনা রোগী, অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা তা জানতেনও না!
জানাজানি হতেই ছড়িয়ে পরে তীব্র আতঙ্ক। চিকিৎসকরা যেখানে বারবার বলছেন পিপিই কিট ছাড়া করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে কীভাবে একজন করোনা রোগীকে পিপিই কিট না পরিয়ে সাধারণ রোগীদের পাশ দিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছেন অন্যান্য রোগীর পরিবার। ঘটনাক্রমে এই সময়েই হাসপাতাল পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন অধ্যক্ষা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি জানাজানি হতে তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। রোগীদের পিপিই কিট না পরিয়ে কোভিড ওয়ার্ড থেকে বের করা উচিৎ হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লক থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে কেন নিয়ে যেতে হচ্ছে রোগীদের। কেন গত একবছরের মধ্যেও করোনা রোগীদের জন্য নিকটবর্তী কোনও সিটি স্ক্যান সেন্টার তৈরি করা গেল না?
এদিকে নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এমার্জেন্সি গেটের পাশে কাচখোলা অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে রইল করোনা আক্রান্ত এক মহিলার মৃতদেহ। পচন ধরে যাওয়া সেই দেহের আশপাশ দিয়ে নিজেদের অজান্তেই ঘোরাফেরা করেন অন্য রোগীদের আত্মীয়-স্বজনরা। তবে সত্যিটা জেনে নিজেদের রোগীদের হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, মৃতদেহ সরানোর কথা বলার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। শেষমেশ প্রায় ২০ ঘণ্টা পর হাসপাতাল কর্মীরা মৃতদেহ নিয়ে যান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.