স্টাফ রিপোর্টার: তিন বছরের একরত্তি মেয়ে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত তো হলই, উলটে তার রক্তের গ্রুপটাই বদলে গেল। নেপথ্যে বোনম্যারো প্রতিস্থাপন। পূর্ব ভারতের মধ্যে এনআরএস-এর হেমাটোলজি বিভাগের এই ঘটনা রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে আইসিএমআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রির্সাচ)-এর আলোচ্য বিষয়।
ডানকুনির জিয়া ঘোষ বিটা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। ফি মাসে ২ ইউনিট করে রক্ত নিতে হয়। ইতিমধ্যেই ২৩ ইউনিট রক্ত নিতে হয়েছে। রক্ত সঞ্চালনের পর দিনকয়েক সুস্থ থাকলেও পরে হিমোগ্লোবিন জমা হচ্ছিল লিভারে। পেট ফুলে ঢাক। রক্তাল্পতা নিত্যসঙ্গী। প্রায় ২৯ দিন আগে জিয়াকে পরীক্ষা করেই ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন হেমাটোলজির অধ্যাপক ডা. রাজীব দে। তিনি বলছেন, ‘‘জিয়ার দিদি’র শরীর থেকে অস্থিমজ্জা সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু দিদিও থ্যালাসেমিয়ার বাহক।’’ বিভাগের আরেক চিকিৎসকের কথায়, অস্থিমজ্জা (বোনম্যারো) প্রতিস্থাপনের আগে ছয়দিন নির্দিষ্ট সময়ান্তরে কড়া ডোজের কেমোথেরাপি করা হয়। ফলে থ্যালাসেমিক কোষ যেমন ধ্বংস হয়েছিল, রক্তের সুস্থ অস্থিমজ্জাও নষ্ট হয়।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের অধ্যাপক ডা.বিপ্লবেন্দু তালুকদারের কথায়, ‘‘মা-বাবার থেকে অস্থিমজ্জা সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করলে অর্ধেক কাজ হত। কিন্তু দিদির থেকে নেওয়ায় পুরো অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়েছে।’’ রাজীববাবুর কথায়, ছোট্ট জিয়ার ব্লাড গ্রুপ ছিল ‘বি’, আর তার দিদির ছিল ‘এ’ ব্লাডগ্রুপ। অস্থিমজ্জা সফল প্রতিস্থাপনের পর জিয়ার রক্তের গ্রুপ বদলে ‘এ’ হয়েছে। প্রায় সাতদিন আইসিইউতে থাকার পর বাকি ২২ দিন পর্যবেক্ষণে থাকার পর শুক্রবার বিকেলে বাড়ি ফিরে গিয়েছে জিয়া। কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা.ইন্দিরা দে বলেছেন,‘‘জিয়া সুস্থ হওয়ায় আর যেসব শিশু এমন মারণ সমস্যায় ভুগছে তারাও চিকিৎসার আওতায় আসবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.