অভিরূপ দাস: ঢাক বাজছে। কানে ভেসে আসছে ‘ইয়া দেবী সর্বভুতেষু…’। মাইক্রোফোনে আবার ঘোষিত হচ্ছে, “আগত দর্শনার্থীদের জানাই, শুভ শারদীয়ার প্রীতি শুভেচ্ছা ও…।” স্বপ্ন নাকি? চিমটি কাটছেন উল্টোডাঙার বাসিন্দারা। উহু। জলজ্যান্ত সত্যি! বড়দিনের প্রাক্কালে দুর্গাপুজো হচ্ছে শহর কলকাতায়। দেখতে হলে আসতে হবে উল্টোডাঙা, তেলেঙ্গাবাগানের কাছে কবিরাজবাগান এলাকায়।
সম্প্রতি বাংলার দুর্গাপুজোকে ‘হেরিটেজ’ আখ্যা দিয়েছে ইউনেস্কো (UNESCO)। বাংলার দুর্গাপুজো মানেই নানান দেশের স্থাপত্যের আঙ্গিকে মণ্ডপ। আলোকসজ্জায় দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ভিনরাজ্য তো বটেই, পৃথিবীর প্রতিটি কোণ থেকে দর্শনার্থীরা আসেন দুর্গাপুজো দেখতে। গত আগস্ট মাসে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় স্থান পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। ডিসেম্বরে এসেছে সেই স্বীকৃতি। তারই উদযাপনে অকাল বোধন শুরু হয়েছে তেলেঙ্গাবাগানে। পুজোর মূল উদ্যোক্তা অমল চক্রবর্তী। পুরভোটে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী। ইউনেস্কোর ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কুমারটুলি (Kumartuli) থেকে ঠাকুর নিয়ে এসেছেন। রাস্তাজুড়ে লাগানো হয়েছে আলোর মেলা। বায়না করা হয়েছে ঢাকি।
শীতের পাড়ায় আচমকাই ফিরে এসেছে শারদীয়ার (Durga Puja) মেজাজ। নতুন জামা প্যান্ট পরে বেরিয়ে পড়েছেন এলাকার অনেকেই। অমল চক্রবর্তীর কথায়, “বাংলার প্রতিটি কোণের মানুষকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। পুজো দেখে যান।” ঠিক হয়েছে মঙ্গলবার বিসর্জন দেওয়া হবে ঠাকুর। ইতিমধ্যেই অকাল বোধন দেখতে সোনারপুর, বেহালা থেকে দর্শক যাচ্ছেন তেলেঙ্গাবাগানের পুজোয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে নেমে পড়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে দেশের একাধিক রাজ্যের সংস্কৃতি ও উৎসব নিয়ে একটি সমীক্ষা শুরু করে ইউনেস্কো। সেই সমীক্ষা অনুয়ায়ী হেরিটেজের তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে বাংলার দুর্গাপুজোকে। এর আগে কেরলের মুদিয়েট্টু লোকনৃত্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। পুজোর উদ্যোক্তা অমল চক্রবর্তীর কথায়, “বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতারা রাজ্যে এসে বলতেন মুখ্যমন্ত্রী নাকি দুর্গাপুজো করতে দেয় না। তাঁদের বলছি বাংলায় এসে দেখুন, এখানে ডিসেম্বরেও দুর্গাপুজো হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.