সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেলের সম্মতি ও সহযোগিতা পেলে মাঝেরহাটে ভেঙে পড়া ব্রিজের পাশ দিয়ে বিকল্প পথের কাজ দ্রুত শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার। পুজোর আগেই রেলগেট বসিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করানোর টার্গেট নিয়েছে নবান্ন। একইসঙ্গে মাঝেরহাট ব্রিজ বন্ধ থাকায় তারাতলা থেকে হাইড রোড ও সিজিআর রোড দিয়ে যে বিকল্প রাস্তা চলছে তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। রবিবার রাতেই তারাতলা-নেচার পার্ক-খিদিরপুরের রামনগর পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় বিটুমিন দিয়ে সংস্কার করিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার রাস্তা বিভাগের মেয়র পারিষদ রতন দে রাতে দাঁড়িয়ে থেকেই দীর্ঘ সাড়ে সাত কিলোমিটার রাস্তা বিটুমিনে মুড়ে দিয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে এই রাস্তাটি দু’পাশে আরও ১০ফুট করে চওড়া করার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তাটি সংস্কার-নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে খিদিরপুর ও মেটিয়াবুরুজ যাতায়াতের জন্য যানবাহনে আরও গতি আসবে৷
গোটা বিষয়টি নিয়ে রেলের সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজ্য সরকার। সেতুর নিচের ওই জমিতে অস্থায়ী পরিকাঠামো গড়ার জন্য রেলের অনুমতি চাওয়া হয়। কীভাবে বিকল্প পথ গড়া যাবে তা খতিয়ে দেখেন নগরোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিকভাবে তাঁদের অভিমত, খালের মধ্যে হিউম পাইপ বসিয়ে বিকল্প পথ পুজোর অনেক আগেই খুলে দেওয়া সম্ভব। ফলে সোমবারের বৈঠক শেষেই বোঝা যাবে কাজ কবে থেকে শুরু হবে। তবে প্রাথমিকভাবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বৈঠকে দু’পক্ষ সহমতে পৌঁছলে আগামিকাল থেকেই কাজ শুরুর সম্ভাবনা।
[পুজোয় বড় উপহার মুখ্যমন্ত্রীর, বাংলার সব পুজো কমিটিকে অনুদান রাজ্যের]
ভেঙে পড়া অংশ সারিয়ে ব্রিজটিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে যান চলাচল শুরু করতে কয়েকমাস গড়িয়ে যাবে। এমনিতে দক্ষিণ কলকাতা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বড় অংশের মানুষের ভোগান্তি পুরোপুরি দূর হয়নি। তবে যানজট অনেকটাই কমানো গিয়েছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায়। সরকারের এখন লক্ষ্য, মাঝেরহাটে ভেঙে পড়া সেতুর নিচের রাস্তাটি খুলে দেওয়া, যা রেল লাইনের উপর দিয়ে গিয়েছে। সমান্তরাল পথটি খুলে দেওয়া গেলে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। তাই ওই বৈঠকে থাকবেন কলকাতা পুলিশ, পূর্ত দপ্তর ও রেলের কর্তারা। পূর্ত দপ্তর ঠিক করবে কীভাবে কাজটা করা যাবে। রেল দেখবে তাদের জমি কতটা কাজে লাগালে সমস্যা মেটানো যায়। অথচ ট্রেন চলাচলে যাতে বিঘ্ন না ঘটে। পুলিশ ঠিক করবে, যানবাহন কীভাবে কোন পথ দিয়ে ঘুরিয়ে বিকল্প রাস্তাটিকে কাজে লাগানো যায়।
কিন্তু কোন পথে হবে এই রাস্তা? নগরোন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার সেখানে গিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা দেখেছেন মাঝেরহাট সেতুর পাশ দিয়ে একটি রাস্তা গিয়েছে খাল পর্যন্ত। তারপর ২২ ফুট চওড়া খাল। পাশে কলকাতা পুরসভার পাম্পিং স্টেশন। তার পাশ দিয়েই গড়া যাবে রাস্তা। খালের জল বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শুধু হিউম পাইপ বসিয়ে দিলেই সমস্যা মিটবে। তবে খালের পাড়ের ও রেল লাইনের মধ্যে উচ্চতার ফারাক রয়েছে। রেলের লাইন নিচুতে। তা উঁচু করলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হবে কিনা, জানাতে পারবেন রেলের ইঞ্জিনিয়াররা। নবান্নের বৈঠকে সরকারের তরফে প্রাথমিক সমীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের এই রিপোর্ট তুলে ধরা হবে। তবে এই রাস্তা চালু করার আগে সেতুর বাকি অংশ কতখানি নিরাপদ তার চূড়ান্ত রিপোর্ট পেতে চায় সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.