Advertisement
Advertisement

‘অনার কিলিং’-এর বদলা নিতে খুন বাবা ও দুই ছেলে, ছ’বছর পর গ্রেপ্তার খুনি

পাঁচ মাস ধরে ওই অভিযুক্তর পিছনে পড়েছিলেন বড়বাজার থানার আধিকারিকরা।

Kolkata: Absconding for 6 yrs, man held for murder
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 26, 2018 10:12 am
  • Updated:July 26, 2018 10:12 am  

অর্ণব আইচ: খুনের বদলা খুন। ‘অনার কিলিং’-এর বদলা নিতে পরপর খুন হয়েছিলেন বাবা ও দুই ছেলে। ছ’বছর আগে বড়বাজারে বাবা মহম্মদ আরিফ ও তার দু’বছর পর ছেলে খুরশিদকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হল মূল অভিযুক্ত মহম্মদ সাহুদ। ছ’বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে। পাঁচ মাস ধরে ওই খুনের অভিযুক্তর পিছনে লেগে ছিলেন বড়বাজার থানার আধিকারিকরা। পুলিশের চোখ এড়িয়ে কখনও সে হাওড়া, আবার কখনও বারুইপুরে। শেষ পর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাওড়ার ডোমজুড়ের বাঁকড়া থেকে সাহুদকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

বৃষ্টি নামতেই ফের ডেঙ্গু আতঙ্ক রাজ্যে, বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি ৭ ]

Advertisement

ছ’বছর আগে গুজরাতে হওয়া ‘অনার কিলিং’-এর রেশ পৌঁছেছিল বিহারের বেগুসরাই ও মধ্য কলকাতার বড়বাজারে। তারই জেরে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে বড়বাজারে পগেয়াপট্টিতে খুন হন ফলের ব্যবসায়ী মহম্মদ আরিফ। তার আগেই বিহারে খুন হয়েছিলেন আরিফের বড় ছেলে সোহেল। আর তার কয়েক মাসের মধ্যে ২০১৪ সালের ১০ জুলাই বড়বাজারের নন্দরাম মার্কেটের কাছে খুন হন আরিফের অন্য এক ছেলে খুরশিদ। তাঁকে গুলি করে বিহারে পালায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যে খাগাড়িয়া টাউনের থানে রোডের একটি গোপন আস্তানা থেকে মহম্মদ শাহ আলম, মহম্মদ মাসিহ আলম ও মহম্মদ সাবিরকে যৌথভাবে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দা ও বড়বাজার থানার আধিকারিকরা। তার আগেই আরিফ খুনের অভিযুক্ত বসির আলম, সাবির, সাহুদ, মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। পরে একে একে ধরা পড়ে অনেকেই। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলার শুনানি শুরু হয়। কিন্তু সাহুদ তখন থেকেই পলাতক। মাস পাঁচেক আগে পুলিশের কাছে খবর আসে, খুনের মামলার কয়েকজন সাক্ষীর সঙ্গে লোক মারফত যোগাযোগ করছে সাহুদ। যাতে তার বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষী না দেন, সেই চেষ্টা করছে সে। সে সরাসরি সাক্ষীদের ফোন না করলেও যাদের মাধ্যমে যে যোগাযোগ রাখছে, তাদের উপর পুলিশ নজরদারি শুরু করে। সেই সূত্র ধরে সাহুদের একটি মোবাইল নম্বর শনাক্ত করা হয়। কিন্তু কখনও ফোন বন্ধ রেখে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায়, আবার কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে গা-ঢাকা দেয় সে। সম্প্রতি পুলিশ জানতে পারে যে ডোমজুড়ে সে আস্তানা তৈরি করেছে। সেই সূত্র ধরে সাহুদের ডেরায় হানা দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আরও দু’টি খুনের অভিযোগে পরে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে বিহার পুলিশও।

রাতভর বর্ষণে জলমগ্ন কলকাতা, ঘূর্ণাবর্তের জেরে বাড়বে বৃষ্টির দাপট ]

পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের শহিদপুর গ্রামের এক তরুণীকে ভালবাসতেন জাফর নামে এক যুবক। কিন্তু সেই প্রেমে বাধা দেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আরিফও। আবার জাফরের পাশে দাঁড়ান বসির আলম। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় গোলমাল। সমস্যার সমাধানে গ্রামের ‘মুখিয়া’ সালিশি সভা ডাকেন। তার আগেই ভয় পেয়ে জাফর গ্রাম ছেড়ে পালান গুজরাটে। সালিশি সভায় জাফরের ভাই বসিরের উপর চাপ দেওয়া হয় ওই তরুণীকে বিয়ে করতে। কিন্তু তরুণীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন বসির। তরুণীর পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেন। অভিযোগ, ‘গ্রামের সম্মান রক্ষা করতে’ গুজরাতে গিয়ে আরিফ ও তার সঙ্গীরা জাফরকে খুন করেন। সেই শোধ তুলতে প্রথমে বসির সঙ্গীদের নিয়ে আরিফের বড় ছেলে সোহেলকে খুন করেন। আরিফ পরিবার নিয়ে হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় পালিয়ে এলে তাঁকে ও পরে তাঁর অন্য ছেলেকে খুন করা হয়। এই ‘অনার কিলিং’ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অন্তত দশটি খুন হয়েছে বলে পুলিশের কাছে খবর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement