অর্ণব আইচ: চুলোচুলি হয়েছে আগেও কয়েকবার। এবার ছেলেকে বিরিয়ানি খাওয়ানো নিয়ে দুই জায়ের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। যা গড়ায় মারপিটে। ছোট জা বিছানার উপর চেপে ধরেন বড় জায়ের মাথা। তারপরই মর্মান্তিক পরিণতি। মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ফাল্গুনী বসু (৪৮) নামে ওই মহিলা। যে বালকটিকে বিরিয়ানি খাওয়ানো নিয়ে গোলমাল, ঘটনার সময় সে ঘরেই ছিল বলে পুলিশের কাছে খবর। এই ঘটনায় বাড়ির ছোট বউ শর্মিষ্ঠা বসুকে (৪০) অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে দক্ষিণ শহরতলির পাটুলি থানা (Patuli Police Station) এলাকার ফুলবাগান রোডে ঘটেছে এই ঘটনা। পাটুলির ওই জায়গায় একসঙ্গেই থাকে দুই ভাই অরিন্দম বসু ও অংশুমান বসুর পরিবার। সরকারি চাকুরে বড় ভাই অরিন্দমবাবুর স্ত্রী মানে বাড়ির বড় বউ ফাল্গুনীর সঙ্গে অংশুমানবাবুর স্ত্রী ছোট বউ শর্মিষ্ঠার পারিবারিক গোলমাল লেগে থাকত। বেসরকারি সংস্থার কর্মী অংশুমান ও শর্মিষ্ঠার সাত বছর বয়সের একটি ছেলেও রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হত দু’জনের মধ্যে। এমনকী, কয়েকবার চুলোচুলি ও হাতাহাতিও হয়েছে দুই জায়ের মধ্যে। বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দও পেতেন প্রতিবেশীরা। যদিও এরপর গোলমাল থেমে যেত। এর আগে এই গোলমাল কোনওদিন মাত্রা ছাড়ায়নি। কিন্তু মাত্রা ছাড়াল সোমবার রাতে।
এলাকা ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বাড়িতে বিরিয়ানি খাওয়া হচ্ছিল। ছোট বউয়ের ছেলেকে তার জেঠিমা আদর করে বিরিয়ানি খাওয়ান। খাওয়ার পরে ছেলেটি বমি করে ফেলে। এই বিষয়টি নিয়েই বাড়ির দুই বউয়ের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। প্রথমে চেঁচামেচি হয়। তারপর শুরু হয় হাতাহাতি। বাড়ির অন্য সদস্যরা বাধা দিতে গেলেও কোনও কাজ হয়নি। সূত্রের খবর, সাত বছরের ছেলেটির সামনেই চুলোচুলি ও মারপিট করতে থাকেন তাঁর মা ও জেঠিমা। সে কেঁদেও ফেলে। পুলিশ জেনেছে, বাড়ির ছোট বউ শর্মিষ্ঠা তাঁর হাত ও পা দিয়ে বড় জায়ের মাথা বিছানার উপর চেপে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই অসুস্থ ও শেষে অচেতন হয়ে পড়েন বাড়ির বড় বউ ফাল্গুনী। পরিবারের লোকেরা তাঁকে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
ফাল্গুনীর স্বামী অরিন্দমবাবু থানায় ভাইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর অভিযুক্ত শর্মিষ্ঠা কেঁদে কেঁদে সবাইকে বলছিলেন, তিনি এভাবে ফাল্গুনীকে মারতে চাননি। এটি দুর্ঘটনামাত্র। যদিও পুলিশ আধিকারিকদের মতে, অভিযুক্ত জানতেন যে, এভাবে মারলে কারও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবুও তিনি থামেননি। এই ব্যাপারে বাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত গৃহবধূকে জেরা করে পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.