মানিকতলা বাজারে ১৪০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। ছবি: গোপাল দাস।
নব্যেন্দু হাজরা: চিংড়ি মাছের মালাইকারি নাকি ভাপা ইলিশ? সঙ্গে ভেটকি মাছের পাতুরি থাকবে তো! তোপসে ফ্রাইটাই বা বাকি থাকে কেন! জামাইয়ের পাত ভরাতে শাশুড়ি মেনু তো অনেকদিন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছেন। কিন্তু জামাইষষ্ঠীর (Jamai Sasthi) বাজার করতে বেরিয়ে শ্বশুরমশাইয়ের যে পকেট ফাঁকা হওয়ার জোগাড়! মাছ, মাংস থেকে আম—লিচু–আগুন দর। খাসি ৮০০ টাকা ছুঁইছুঁই, চিকেন প্রায় ২৪০। মাছ তো যে যেমন পারছে, হাঁকছে।
সবমিলিয়ে আবহাওয়ার মতোই জামাইষষ্ঠীর বাজার তেতেপুড়ে ফুটছে। কিন্তু তা বলে উদ্দীপনায় ভাটা নেই। কার্যত গত দু’বছর জামাইষষ্ঠী কেটেছে করোনার চোখরাঙানির মধ্যে। বহু জামাইয়েরই শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হয়নি। আয়োজনও ছিল কম। তাই এবার ষষ্ঠী বেশিরভাগ বাড়িতেই হচ্ছে বেশ জাঁকজমক করে। তারউপর রবিবার ছুটির দিনটা হয়ে গিয়েছে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো। সেইমতো বাজারহাটেও শনিবার থেকেই কেনাকাটার ভিড় লেগে রয়েছে। আর চাহিদা অনুযায়ীই দাম চড়ছে মাছ—মাংসেরও। রবিবার সেই দাম আরও চড়ার শঙ্কা।
শনিবার কলকাতার বেশিরভাগ বাজারেই এক কেজির থেকে বড় ইলিশের দাম ১৮০০-২২০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি সাইজের মাছের দাম ছিল ১২০০—১৬০০টাকা। তবে কিছু বাজারে খোকা ইলিশও বিকিয়েছে ৮০০—১০০০ টাকায়। গলদা চিংড়ি ৮০০—১২০০, পমফ্রেট ৬০০—৮০০, বড় ভেটকি ৭০০—৮০০, তোপসে ৬০০—৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বাজার ভেদে খাসির মাংসের দাম ছিল এদিন ৭৬০—৭৮০ টাকা। মুরগি ২২০—২৪০র মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। মাছের বাজার কোনওমতো সারলেও ফল কিনতে গিয়ে ফের দামের অঙ্কে হোঁচট খেয়েছেন শশুরমশাই।
“যে বাজেট নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম, তাতে কুলিয়ে ওঠা যায়নি। ফের এটিএম থেকে টাকা তুলতে হল। জিনিসের যা দাম”–এদিন ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে ফেরার পথে বলছিলেন লেকটাউনের বাসিন্দা সুরঞ্জন সাহা। এবারই প্রথম তাঁর মেয়ে—জামাই আসছেন জামাই ষষ্ঠীতে। হিমসাগর ১০০—১২০ টাকা, গোলাপখাস ১৩০—১৫০, ল্যাঙড়া ১৩০—১৫০ টাকা প্রতি কেজিতে বিকিয়েছে। দাম অবশ্য বাজারভেদে কম বেশি রয়েছে। মানিকতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “জামাই ষষ্ঠীতে বাজারদম একটু তো চড়া থাকেই। মাছের দামও তাই একটু চড়াই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.